আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। বিশাল অঙ্কের এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী অর্থমন্ত্রী হিসেবে মাহমুদ আলী।
এর আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদন হবে এবং পরে ওই প্রস্তাবে সই করবেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পরে সংসদে পাস হয়ে ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
নানা সংকটের মধ্যেও এবারের অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের প্রতিপাদ্য ধরা হচ্ছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’।
বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে একটি কৌশল এঁকেছে সরকার। আগামী এক বছর দেশ পরিচালনার সার্বিক আয়-ব্যয়ের হিসাব থাকবে প্রস্তাবিত বাজেটে। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের ২৪তম ও বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেট প্রথমে অনুমোদন হবে; আর আগে বাজেট নিয়ে সংসদে ৪০ ঘণ্টা আলোচনা হবে। আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে অর্থবিভাগ। যদিও গত ১৪ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে।
আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করেছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়। তবে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বড় জোর ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রায় কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপণ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আয়ের খাত হিসেবে মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের উপর ভরসা করছে সরকার। এছাড়া বিশাল এ ঘাটতি পূরণে সরকার কোন খাত থেকে কত টাকা ঋণ নেবে তারও একটি কৌশল তৈরি করেছে।
ছক অনুযায়ী, এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে এক লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, এছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসাবে নেবে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যা আছে এক লাখ ২ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধার নিতে চায় ব্যাংক খাত থেকে। যার পরিমাণ ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এরপর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আর অন্যান্য খাত থেকে আসবে ৮ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে।