বাঙালি সব সময়েই ভোজনরসিক। পাঁচ তারকা হোটেল বা ভ্রাম্যমাণ দোকান, ভালো খাবারের জন্য তারা সব জায়গায় যেতে প্রস্তুত। এই তালিকায় বড় রেস্তোরাঁ থেকে ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোর চাহিদা একটু বেশিই লক্ষ্য করা যায়। এসব খাবারের পুষ্টিগুণ বা মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও অনেকেই তা পছন্দ করেন। ঠিক তেমনি একটা জায়গা রাজধানীর ‘পান্থপথ’। এখানকার ‘স্ট্রিট ফুড’ জোন ইদানীং খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যার পর থেকেই এখানে ভিড় বাড়তে থাকে।
পান্থপথ স্ট্রিট ফুড জোনে চটপটি, ফুচকা, চিকেন ফ্রাই খাবারের জন্য সন্ধ্যার পর থেকেই ফুডপ্রেমিদের ভিড় জমে। পাশাপাশি এখানকার শরবতের দোকানে পাওয়া যায় পুদিনা, লেবু, পেঁপে, মাল্টা, আনারস, তরমুজ, আমসহ বিভিন্ন প্রকারের শরবত।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব কিংবা আত্মীয়স্বজন নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ভিড় করছেন এখানকার দোকানগুলোতে। কেউ গল্প করছেন, কেউবা খুনসুটির মধ্যে নিজেদের ভালো লাগা খুঁজছেন।
কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ‘তান্দুরি চা’ ও ‘মালাই চা’। তান্দুরি চা বিক্রি হয় ৫০ টাকা, আর মালাই চা বিক্রি হয় ৬০ টাকা। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই দুই ধরনের চা খেতে ভিড় জমান আশপাশের বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে আলাপচারিতায় এক চা বিক্রেতা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমার দোকানের ‘চা’ সবাই খুব পছন্দ করেন। তাই সন্ধ্যা হলেই ক্রেতারা এখানে ভিড় জমান। আলহামদুলিল্লাহ... প্রতিদিন প্রচুর চা বিক্রি করি।”
এক শরবত বিক্রেতা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সন্ধ্যা হলেই আশপাশ থেকে অনেকেই এখানে শরবত খেতে চলে আসেন। ক্রেতার সংখ্যা এত বেশি হয় যে, সামলে উঠতে পারি না। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শরবত বিক্রি হয়। যা বিক্রি হয়, তা দিয়ে সংসার চালাই।”
পরিবার নিয়ে ফুচকা খেতে পান্থপথে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত খোকন শেখ। দুই প্লেট ফুচকা খেয়ে আবার এক প্লেট ফুচকা অর্ডার করেন তিনি। সার্বিক বিষয় নিয়ে খোকন শেখের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সারা দিন অফিস, কাজ ব্যস্ততা লেগেই থাকে। পরিবারকে সময় দেবো তা হয়ে উঠে না। তাই শুক্র ও শনিবার বিকেল বা সন্ধ্যায় পরিবার নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি। আজও এসেছি।”
খোকন শেখ আরও বলেন, “শুধু অফিসে সময় ব্যয় করলে হবে না। পরিবারকে সময় দিতে হবে। পান্থপথের খাবার খুব সুস্বাদু, তাই এখানে এসেছি।”
সাকিব, নাঈদ, সিহাবসহ পাঁচজন বন্ধু এসেছেন তান্দুরি চা খেতে। হাতে চায়ের কাপ, আর মুখে হাসি নিয়ে গল্প-আড্ডা ডুব দিতে দেখা যায় তাদের।
তাদের মধ্যে সাকিবের সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমাদের বাসা বাংলামটর। এখানে আজ ডেট করে এসেছি। বেশ কয়েকদিন হলো আমাদের তেমন দেখা নেই। তাই আজ ডেট করে আড্ডা দিতে এই জায়গা ঠিক করেছি।”