দেশের মাজার, মন্দির এবং ওরস শরীফের সুরক্ষা ও শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য জরুরি আবেদন জানিয়েছে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ইউরোপ। এ লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর একটি বিবৃতি দিয়েছেন তারা। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন বাংলাদেশ ও দেশের বাইরে অবস্থানরত ১০০ নাগরিক।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশজুড়ে মাজার, মন্দির এবং ওরস শরীফে ভাঙচুর ও সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বিগ্ন হয়ে আমরা এই চিঠি লিখছি। পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে আমরা দেখছি, কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাদের হীন স্বার্থ এবং উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে এই সংবেদনশীল স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তু করে ধ্বংস করছে। এই পরিস্থিতি শুধু উদ্বেগজনকই নয়, আমাদের জাতির শান্তি, ঐক্য এবং সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির জন্য মারাত্মক হুমকি বলে আমরা মনে করি।
মাজার এবং ওরসগুলো বাংলাদেশের অসংখ্য নাগরিকের জন্য গভীর আধ্যাত্মিক, ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহন করে। এধরনের স্থাপনায় একের পর এক হামলা আমাদের জাতীয় মূল্যবোধের প্রতি আঘাত এবং আমাদের বৈচিত্র্যময় সমাজে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য মারাত্মক হুমকি। এই জরুরি উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শান্তি পুনপ্রতিষ্ঠা এবং বহু মানুষের কাছে পবিত্র এসব স্থাপনার সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
আমরা সরকারের কাছে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি বিবেচনা করার জন্য দাবি জানাই—
১। দ্রুততম সময়ে নিরাপত্তা বিধান: মাজার, মন্দির, ওরসসহ অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ ধর্মীয় স্থানগুলির সুরক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োজিত করুন। নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি দৃশ্যমান হলে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য ভাঙচুর মোকাবেলায় তা শক্তিশালী প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করবে।
২। আইন প্রয়োগে কঠোরতা: ধর্মীয় স্থাপনাগুলো ভাঙচুর এবং ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা করার জন্য বিদ্যমান আইনগুলো কঠোরভাবে প্রয়োগ করুন। দায়ী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ আইনি বিচার করা হলে একটি স্পষ্ট বার্তা যাবে যে এ ধরনের কাজ সহ্য করা হবে না—এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩। পুনর্গঠন এবং পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা: ক্ষতিগ্রস্ত মাজার, মন্দির এবং ওরস শরীফগুলোর পুনর্নির্মাণ এবং পুনরুদ্ধারে সহায়তা করুন। আমাদের সম্মিলিতভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তিতে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতির প্রতীক হবে আমাদের এই কাজ।
৪। আন্তঃধর্মীয় সংলাপের উদ্যোগ: পারস্পরিক বোঝাপড়া, সম্মান ও সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য ধর্মীয় এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের মধ্যে সংলাপের আয়োজন করুন এবং গ্রাম-মফস্বল পর্যন্ত বিস্তৃত করুন। আন্তঃধর্মীয় আলাপচারিতাকে উৎসাহিত করা হলে তা বিভাজনগুলি দূর করে আন্তঃসম্প্রদায়ের বিশ্বাস পুনর্নির্মাণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
৫। জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান: ধর্মীয় সহনশীলতার গুরুত্ব এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে জনগণকে শিক্ষিত করার জন্য প্রচারাভিযান শুরু করুন। এর ফলে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সম্মানজনক সমাজ গড়ে উঠবে।
বিবৃতিদাতার হলেন (ক্রম জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়)
১। মতিয়া পারভিন, শিক্ষক
২। নাসরিন খন্দকার, গবেষক
৩। মতিউর রহমান, ব্যবসায়ী
৪। আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির, সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
৫। আহমেদ নাদির, সোশ্যাল এক্টিভিস্ট
৬। এস এম শাহারিয়ার বিপ্লব, ফ্রিল্যান্সার
৭। জোবায়েন সন্ধি, প্রধান সম্পাদক, অংশুমালী
৮। মামুন আল সিরাজ, পিএইচডি শিক্ষার্থী
৯। মো. শরিফ হাসান, শিক্ষার্থী
১০। সৈয়দ বাবুল, অবসরপ্রাপ্ত
১১। মাহবুবুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত
১২। অর্ণব গোস্বামী, মোশন ডিজাইনার
১৩। জয়দেব কুমার সাধু, ব্যবসায়ী
১৪। তন্ময় কর্মকার, প্রকৌশলী
১৫। রুখসানা দিল-রিয়াজ, টেলিযোগাযোগ এক্সিকিউটিভ
১৬। নাজিয়া হোসেইন জেমি, চাকরিজীবী
১৭। আহমেদুর চৌধুরি, এডিটর-ইন-চিফ ও প্রকাশক, শুদ্ধস্বর
১৮। আহসান হাবীব সোনার, শিক্ষার্থী
১৯। ফাহমিদা হানিফ ইলা, শিক্ষার্থী
২০। রাহাত মুস্তাফিজ, লেখক ও অনলাইন একটিভিস্ট
২১। আফরিন আক্তার জেসমিন, শিক্ষার্থী
২২। আশরাফুন নাহার, শিল্পী
২৩। কাজী গোলাম তাফসিন, শিক্ষার্থী
২৪। অনুপম সৈকত শান্ত, লেখক ও এক্টিভিস্ট
২৫। মাসকাওয়াথ আহসান, এডিটর ইন চিফ, ই-সাউথএশিয়া
২৬। রকিবুল ইসলাম, আইটি টেকনিশিয়ান
২৭। সোহেব মুজাম্মাল, শিল্পী
২৮। আনু মুহাম্মদ, লেখক ও সম্পাদক, সর্বজনকথা
২৯। আফসানা আহামেদ ইভা, শিক্ষার্থী
৩০। আরিফ রহমান, লেখক
৩১। আহমাদ সাদ, শিক্ষার্থী
৩২। ইশরাত জাহান ঊর্মি, সাংবাদিক
৩৩। উম্মে ফারহানা, শিক্ষক
৩৪। এম কে মুনিম, বেকার
৩৫। এস এম মোহাইমিনুল হাসান, লেখক
৩৬। ওহামা রাজ, শিক্ষার্থী
৩৭। জাকির তালুকদার, লেখক
৩৮। ডক্টর মো. হাবিব জাকারিয়া, শিক্ষক
৩৯। দেবস্মিতা দে, গবেষক
৪০। নাসিফ ফারুক আমিন, লেখক ও চিত্রনাট্যকার
৪১। নাসরুল ইসলাম, ডেটা সায়েন্টিস্ট
৪২। ফিরোজ আহমেদ, নাগরিক
৪৩। মো. আরিফ হাসান, প্রকৌশলী
৪৪। মো. ইব্রাহিম সুজন, বেসরকারি চাকরিজীবী
৪৫। মোহাম্মদ আমজাদ হোসেইন, সেলফ-এমপ্লয়েড
৪৬। শাহতাব সিদ্দীক অনীক, সাংবাদিক
৪৭। সাঈদ জুবেরী, কবি ও সাংবাদিক
৪৮। সুকান্ত সরকার, ব্যবসায়ী
৪৯। সুদীপ্ত বিশ্বাস, চাকুরিজীবী
৫০। সৈকত দে, ফ্রিল্যান্স লেখক
৫১। সৈকত শিকদার, ভিজুয়াল আর্ট প্র্যাকটিশিনর
৫২। সৈয়দ মো. আসলাম, লেখক ও শিল্পী, ধ্বনি-চিত্র লিমিটেড
৫৩। সোনিয়া আফরোজ যূথী, ব্যাংকার
৫৪। সোহেল তৌফিক, অভিনেতা
৫৫। স্বপন কুমার রায়
৫৬। মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, এনজিও প্রোফেশনাল
৫৭। আনাম আহমেদ, টিচিং এসিস্টেন্ট, এম এ, কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি
৫৮। আফিকুন নাহার, ফার্মাস্টি
৫৯। খান মুকাররব ইবন আসাদ, Editor, Riseup Labs
৬০। নাজমুল হক, শিক্ষার্থী
৬১। নাদিরা ইয়াসমিন, শিক্ষক, সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, নরসিংদী সরকারি কলেজ
৬২। নুরুজ্জামান মানিক, লেখক ও সাংবাদিক
৬৩। নুরুর রহমান, বেসরকারি চাকুরী
৬৪। নুসরাত জাহান সুমনা, শিক্ষার্থী
৬৫। পাপড়ি রহমান, লেখক, ছোটকাগজ সম্পাদক ও সংগঠক
৬৬। পারভেজ হাসেম, আইনজীবী
৬৭। পার্থ দে, চাকরিজীবী
৬৮। প্রণব আচার্য্য, কবি ও গণমাধ্যম কর্মী
৬৯। ফেরদৌস আরা রুমি, Development worker
৭০। বীথি ঘোষ, Activist Musician
৭১। মাহিসুন রাশটি, শিক্ষার্থী, Jahangirnagar University
৭২। মোশাহিদা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৭৩। মোহাম্মদ সদরুল হাসান, Service
৭৪। শিমুল সালাহ্উদ্দিন, কবি ও সাংবাদিক
৭৫। সাঈদ ইসলাম, কবি
৭৬। সাদমান সাকিব, ব্যবসায়ী এক্সিকিউটিভ
৭৭। সাদিয়া মির্জা, অভিনেত্রী
৭৮। সাবিরা, এনজিও কর্মী
৭৯। সিফাত রিজওয়ানা তৃষা, একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মতত
৮০। সৈয়দ তারিক, ফ্রিল্যান্সার
৮১। রাকিবা আমাতুল করিম, ডাক্তার
৮২। শাহাদাৎ স্বাধীন, পিএইচডি শিক্ষার্থী, সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি
৮৩। জামাল আবেদীন ভাস্কর, ব্যবসায়ী
৮৪। তারিকুল আলম খান, Payroll administrator
৮৫। ফারজানা আক্তার, শিক্ষার্থী
৮৬। মোস্তফা ফারুক, প্রাক্টিস ম্যানেজার, The Barkantine Practice
৮৭। রাজিব খান, সেলফ এমপ্লয়েড
৮৮। শেফালি বেগম, ব্যবসায়ী
৮৯। সাকি ফারজানা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক পরিচর্যা কর্মী
৯০। নাজিম উদ্দিন, Scientist
৯১। পিয়াস দাস, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার
৯২। ফাহমিদুল হক, ফ্যাকাল্টি, বার্ড কলেজ, নিউ ইয়র্ক
৯৩। রোকন জামান, Scientist
৯৪। সায়েমা খাতুন, নৃতত্ত্ববীদ
৯৫। নাজমুল আহমেদ, চাকরিজীবী
৯৬। শিরিন ববি, Motion Designer
৯৭। সংগ্রাম নাগ, Scientist
৯৮। সনি শাখাঁরি, Mitarbeiterin
৯৯। সুপ্রীতি ধর, মানবাধিকার কর্মী
১০০। নাদিয়া ইসলাম, জিনেটিক এঞ্জিনিয়ার