কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে (বীর প্রতীক) লাঞ্ছিতের ঘটনায় দুই সমর্থককে বহিষ্কার করে তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার আমির অ্যাডভোকেট মু. শাহজাহান, জেলা সেক্রেটারি ড. সরওয়ার উদ্দিন ছিদ্দিকী, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আমির মু. মাহফুজুর রহমান ও উপজেলা সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইন তাদের বহিষ্কার করেন।
বহিষ্কৃত জামায়াত সমর্থকেরা হলেন মু. আবুল হাশেম ও মু. অহিদুর রহমান। আবুল হাশেম চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা গ্রামের প্রয়াত আবদুল বারেকের ছেলে এবং অহিদুর একই গ্রামের প্রয়াত শফিকুর রহমানের ছেলে।
এতে বলা হয়, চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছনার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এটি দুঃখজনক ঘটনা। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। জামায়াতে ইসলামী শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়, দেশের সাধারণ কোনো নাগরিককেও হেনস্তা করা সমর্থন করে না। এই দুঃখজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে সোপর্দ করার জন্য আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা জামায়াতে ইসলামীর কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মী নয়। জামায়াতে ইসলামীর কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মী আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কোনোভাবেই সমর্থন করে না এবং প্রশ্রয় দেয় না। আমরা স্থানীয়ভাবে খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি যে আবদুল হাই কানু তার নিজ এলাকায় হত্যা মামলাসহ ৯টি মামলার আসামি। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ঢাকায় অবস্থানকারী আবুল হাশেম ও দুবাইফেরত অহিদুর রহমানের শাস্তি দাবি করছি এবং কোনো অবস্থাতেই দেশবাসীকে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা আবুল হাশেম ও অহিদুর রহমানসহ এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দাবি করছি এবং জামায়াতে ইসলামীর শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও ভাব-মর্যাদা ক্ষুণ্ন করায় সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও তাদের জামায়াতে ইসলামী থেকে বহিষ্কার ঘোষণা করছি।
এর আগে গতকাল রোববার দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের (৭৮) গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, জুতার মালা পরানোর পর ওই দুই ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধার বাবার দুই হাত ধরে টানাহেঁচড়া করছেন।