• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ০৮:১৭ এএম
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়
হাইকোর্ট। ফাইল ছবি

রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে ৩৭ বছর আগে দায়ের করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজের রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের স্বীকৃতি দেওয়া সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও আঘাত করে না।

এ রায় দিয়েছেন বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ। অন্য দুই বিচারপতি হলেন, কাজী রেজা-উল হক ও মো. আশরাফুল কামাল। ৫২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি ২১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংযুক্ত করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সংবিধানে ২ক অনুচ্ছেদ যুক্ত করে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে।

তখন স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ওই বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ১৫ জন বরেণ্য ব্যক্তি। তারা হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, বিচারপতি কে এম সোবহান, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, শিল্পী কলিম শরাফী, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত, লেখক বদরুদ্দীন উমর, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

রিট আবেদনের ২৩ বছর পর ২০১১ সালের ৮ জুন হাইকোর্ট রুল দেন। সেদিন আদালত অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের সহায়তাকারী) হিসেবে ১৪ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর নাম ঘোষণা করে আদেশ দেন। এর প্রায় পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালের ৮ মার্চ রুল শুনানির জন্য আদালতে ওঠে। সেদিন আদালত অ্যামিকাস কিউরি মনোনীত করার আদেশ প্রত্যাহার করেন। ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ রিটটি খারিজ করে রায় দেওয়া হয়।

রুল খারিজ করে দেওয়া রায়টি লিখেছেন বেঞ্চের নেতৃত্বদানকারী বিচারপতি নাইমা হায়দার। এর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি। রায়ের অভিমতে বলা হয়, ওই সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ২ক যুক্ত করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। তবে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল রায়ে পৃথক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন।

প্রসঙ্গত, পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানে ২ক অনুচ্ছেদ সংশোধনী আনা হয়। এতে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সম অধিকার নিশ্চিত করবেন।’

Link copied!