ঢাকার উন্নত ও জনপ্রিয় গণপরিবহন মেট্রোরেল থেকে ১৮ দিনেই সাড়ে ২০ কোটি টাকা আয় হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএসটিসিএল)। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এক কনফারেন্সে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ এ তথ্য জানান।
ডিএসটিসিএল-এর প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সেই কনফারেন্সে জানানো হয়, চলতি সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৮ দিনে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেছেন ৪৯ লাখ ৯ হাজার ৪৯ জন যাত্রী। এতে কর্তৃপক্ষের আয় হয়েছে ২০ কোটি ৬৭ লাখ ৩ হাজার ৫৯১ টাকা।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দুই শুক্রবার বন্ধ ছিল মেট্রোরেল। তাছাড়া গত ১৮ সেপ্টেম্বর কারিগরি ত্রুটির কারণে দীর্ঘ সময় মেট্রোরেল বন্ধ ছিল। এদিনে ৫৪ লাখ ৯১ হাজার ১৪০ টাকা আয় হয়েছে। তবে লোকসান হয়েছে এক কোটি টাকা।
ডিএসটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ আরও জানান, মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ যাত্রী ভ্রমণ করেছে গত ১২ সেপ্টেম্বর। এদিনে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৮৯২ জন যাত্রীর ভ্রমণে সর্বোচ্চ আয় ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬৬ টাকা। তাছাড়া গড়ে প্রতিদিন ৩ লাখ মানুষ মেট্রোরেল ভ্রমণ করছেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে মেট্রোরেলের যাত্রী ও আয় বিষয়ক এই সংবাদ প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে বলা হচ্ছে, “মেট্রোরেলে আগে ৬ মাসে আয় ছিল ১৮ কোটি টাকা। গত ১৮ দিনে আয় হয়েছে ২০ কোটির বেশি।” অর্থাৎ বিগত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ের চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে মেট্রোরেলের আয় বহুগুণ বেড়েছে। এ নিয়ে সরব নেটিজেনরা।
প্রাপ্ততথ্য মতে, মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ উদ্বোধন করা হয়েছিল ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর। অডিট ফার্মের নিরীক্ষা অনুযায়ী, মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ছয় মাসে আয় হয়েছে ১৮ কোটি ২৮ লাখ ৬ হাজার ৫১৪ টাকা।
অবশ্য, তখন অবধি মতিঝিল পর্যন্ত রুট চালু হয়নি। প্রায় এক বছর পর ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর চালু হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ। এরপর থেকে শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত উত্তরা উত্তর হতে মতিঝিল পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী মেট্রোরেল নিয়মিত চলাচল করছে।
শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত রুটে ছয় মাসে আয় হয়েছে মাত্র ১৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা। অথচ নতুন সরকারের সময় উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল রুটে এক মাসের কম সময় অর্থাৎ ১৮ দিনেই আয় হয়েছে ২০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। দুই সরকারের আমলে আয়ের এই বড় ব্যবধান নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সরব হয়েছেন নেটিজেনরা।
ছয় মাসে ১৮ কোটি টাকা আয়ের হিসাব নিয়ে অনেকে বলছেন, সে সময়ে রুট শর্ট ছিল। স্টেশনের সংখ্যাও ছিল কম। ফলে আয়ও কম হওয়ার কথা। বিষয়টি নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা, সমালোচনা শুরু হয়েছে।