প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় করা মামলায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলমসহ (৫৮) ছয়জনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত সংস্থা। এসময় রিমান্ড শুনানির জন্য মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদন করা অপর পাঁচ আসামি হলেন, পিএসসির সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির (৪৯), ডিডি আবু জাফর (৫৭), প্রতিরক্ষা ও অর্থ বিভাগ এসিসিডিএফের (বিওএফ) অডিটর প্রিয়নাথ রায় (৫১), মিরপুরের পোশাক কারখানার ব্যবসায়ী নোমান সিদ্দিকী (৪৪) ও ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলাম (২৭)।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) গ্রেপ্তার ১৭ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় আবেদ আলীসহ ৬ জন ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
এর আগে সোমবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত অভিযোগে রাজধানীর শেওড়াপাড়ার ওয়াসা রোডের নিজ ফ্ল্যাট থেকে সৈয়দ আবেদ আলী ও তার বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান ওরফে সিয়ামসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিসিএসের ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার পদের ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে সাতজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তারা বলেছেন, প্রশ্নপত্র চাকরিপ্রার্থীদের হাতে দেওয়া হতো না। পরীক্ষার আগের রাতে ঢাকা ও এর আশপাশ এলাকায় নিরাপদ জায়গায় (চক্রের সদস্যদের ভাষায় বুথ) রাখা হতো। রাজধানীর পল্টনে একটি গোডাউনে চাকরিপ্রার্থীদের জড়ো করা হতো। সারা রাত প্রশ্নের উত্তর মুখস্ত করিয়ে সকালে পরীক্ষা দিতে পাঠানো হতো।
সর্বশেষ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার ৪৬ জন প্রার্থীকে রাজধানীর পল্টনের একটি পানির ফিল্টারের গুদামে রাখা হয়েছিল। বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এই চক্রটি ২০০২ সালে ২৪তম বিসিএস পরীক্ষা থেকে শুরু করে সর্বশেষ ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও তারা ফাঁস করেছে। এর পাশাপাশি পিএসসির অধীনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নন ক্যাডার পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তারা ফাঁস করেছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে অনেকের নাম আসছে। জড়িত প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করা হবে।”