হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে স্থগিত করা হয়েছে সারা দেশে ঘোষিত চিকিৎসকদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম আন্দোলনরত চিকিৎসদের আশ্বাস দেন। আশ্বাস পেয়ে চিকিৎসকরা আগামীকাল সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত করেন।
এর আগে চিকিৎসাধীন এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঘিরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের মারধর করে বহিরাগতরা। আরেক ঘটনায় জরুরি বিভাগে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এসব ঘটনায় রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদ ও নিরাপত্তার দাবিতে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেন সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকরা।
ঘোষণার পর থেকে ঢামেকের জরুরিবিভাগসহ সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েন শত শত রোগী। অনেকেই কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে গেছেন। রোগীদের কেউ কেউ জরুরি বিভাগের সামনে শুয়ে পড়েন।
চিকিৎসা সেবা না পেয়ে অনেকেই যন্ত্রণায় সহ্য করতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। অ্যাম্বুলেন্সে করে জরুরি চিকিৎসার জন্য আনা রোগীদের নিয়ে কী করবেন- বুঝতে পারেননি কেউ। রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনদের আহাজারির দৃশ্য দেখা গেছে।
এর আগে ঢামেক নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ ঘোষণা দেন, দেশের সমস্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, চেম্বার ও চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে কমপ্লিট শাটডাউন চলবে। এই সময়ে কোনো সেবা দেওয়া হবে না। চার দফা দাবি জানিয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, দাবি আদায় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে সবধরনের চিকিৎসাসেবা খাতে কমপ্লিট শাটডাউন চলবে।
চিকিৎসকদের দাবিগুলো হলো-
১. হাসপাতালের মতো একটি জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে যে সকল ব্যক্তি বা কুচক্রী মহল এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সকলকে চিহ্নিত করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
২. নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অবিলম্বে দেশের সকল স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য পুলিশের (আর্মড ফোর্স) মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে হাসপাতালে রোগীর ভিজিটর (ভিজিটর কার্ডধারী) ব্যতীত বহিরাগত ব্যক্তি বা মহল কোনোভাবেই হাসপাতালে ভেতর প্রবেশ করতে পারবে না, যা স্বাস্থ্য পুলিশের (আর্মড ফোর্স) মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. হাসপাতালে রোগীর সেবাপ্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অসংগতি/অবহেলা পরিলক্ষিত হলে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ প্রদানের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা যেতে পারে। তবে কোনোভাবেই আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।