• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি আসা দেখে শাটার নামান দোকান মালিকরা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৪, ১২:৫৬ পিএম
ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি আসা দেখে শাটার নামান দোকান মালিকরা
শাটার নামাচ্ছেন দোকান কর্মী। ছবি : সংগৃহীত

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের প্রাণহানির পর রাজধানীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে চালানো হচ্ছে অভিযান। তারই ধারাবাহিকতায় এবার খিলগাঁওয়ের রেস্টুরেন্টগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার ঘাটতি খুঁজতে অভিযানে নেমেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় অভিযানিক দলের গাড়ি দেখে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার ঘাটতি থাকা দোকানগুলোর মালিকরা শাটার নামাতে কর্মীদের নির্দেশ দিতে শোনা যায়।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটের দিকে খিলগাঁওয়ের ‘শহীদ বাকি সড়ক’ এলাকায় গড়ে ওঠা রেস্তোরাঁগুলোর সামনে এমন চিত্র দেখা যায়। অভিযান পরিচালনা করছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম।

সরেজমিন দেখা যায়, ‘আল-আকসা রেস্তোরাঁয় সকালের নাশতা করছিলেন কয়েকজন। কেউ আবার চায়ে চুমুক দিচ্ছিলেন। এমন সময় আসে অভিযানিক দলের গাড়ি। তাদের গাড়ি দেখে ক্যাশ কাউন্টারে বসা কর্মী বলতে থাকেন, ‘ওই শাটার নামা, ম্যাজিস্ট্রেট আইছে’। এরপর হুড়মুড় করে রেস্তোরাঁয় থাকা কাস্টমাররা সবাই বেরিয়ে পড়েন। পরে হোটেলের কর্মীরা দ্রুত শাটার নামিয়ে সটকে পড়েন। ওই রেস্তোরাঁয় প্রবেশের মুখে ২টি বড় গ্যাসের সিলিন্ডার দেখা গেছে।

এরপর অভিযানিক দলের গাড়ি আটতলার একটি রেস্টুরেন্ট ভবনের সামনে যায়। ওই ভবনের নিচতলা ছাড়া প্রতিটি ফ্লোরে রয়েছে একটি করে রেস্টুরেন্ট। তার পাশে একটি দোকান হচ্ছে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নামের। গাড়ি থামানোর সঙ্গে সঙ্গে দোকানের কর্মীরা বেরিয়ে আসেন এবং দোকানের শাটার বন্ধ করে তালা মারেন। এরপর তাদের দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করতে দেখা যায়।

শুধু এই দুটি দোকান নয়, আশপাশের বেশিরভাগ দোকানের কর্মীরা দোকানের শাটার নামিয়ে তালা মেরে চলে গেছেন।

অভিযানের শুরুতে খিলগাঁও শর্মা হাউজ রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তদারকি করেন তারা। ওই ভবনের মাত্র ৩ ফুটের একটি সিঁড়ি রয়েছে। অথচ সিঁড়ি থাকার কথা ছিল তিন মিটার। এছাড়া ছোট একটি লিফট রয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিস ভবনটি অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করে।
এদিকে গতকাল ধানমন্ডি এলাকায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার ঘাটতি পাওয়ায় দ্য বুফে এম্পায়ার, বাফেট লাউঞ্জ ও বাফেট প্যারাডাইজ নামক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ ছাড়া ভিসা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড নামক প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার ব্যাপক দুর্বলতা পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়াও সামগ্রিকভাবে কেয়ারি ক্রিসেন্ট প্লাজার অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা থাকায় পুরো ভবনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইল রোডের গ্রিন কোজি কটেজে লাগা আগুনে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন। যাদের সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক।

জানা গেছে, সেই ভবনের প্রথম তলায় ‘চায়ের চুমুক’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট ছিল। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত। যা পরে পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র এক মাস আগে ভবনটির নিচ তলায় এ রেস্টুরেন্টটি যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকেই রাজধানীর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রেস্টুরেন্টগুলোতে অগ্নি নির্বাপণ জোরদার করতে অভিযান পরিচালনা করছে বিভিন্ন সংস্থা।

Link copied!