ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে যেসব কারণে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তা জানালেন অন্যতম আসামি শিমুল ভূঁইয়া। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব কারণ উল্লেখ করেন।
শিমুল ভূঁইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আনার হত্যার পেছনে তিনটি কারণের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক আখতারুজ্জামান শাহীন।
যেসব কারণে হত্যার পরিকল্পনা
১. শাহীনের সঙ্গে আনারের হুন্ডি কারবার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। ২. সীমান্তে স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ে ব্যবসায়িক বিরোধ তৈরি হয়েছিল। ৩. শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে চরমপন্থা ও রাজনৈতিক আদর্শগত বিরোধ ছিল এমপি আনারের।
শিমুল ভূঁইয়া ছিলেন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) একজন শীর্ষ নেতা। খুলনা, ঝিনাইদহ ও যশোরে সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকারী। এ কাজে বাধা ছিলেন এমপি আনার। এরমধ্যে আখতারুজ্জামান শাহীন এমপি আনার হত্যার পরিকল্পনা করলে শিমুল রাজি হয় ও যৌথভাবে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।
শিমুল ভূঁইয়া স্বীকার করেছেন, এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কলকাতায় হত্যা মিশন শেষ করে গত ১৫ মে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
বুধবার (৫ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) তোফাজ্জল হোসেন জবানবন্দি রেকর্ড করেন শিমুল ভূঁইয়ার। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে দ্বিতীয় দফায় পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ।
ডিবি পুলিশ সূত্রমতে, গত ১২ মে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে এমপি আনার ভারতে যান। কলকাতায় বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। পরদিন তাকে প্রলুব্ধ করে নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে নেওয়া হয়। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিলাস্তি রহমান, শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর, সহযোগী জিহাদ হাওলাদার, সিয়াম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী। খুনের আগেই আখতারুজ্জামান শাহীন চলে আসেন ঢাকায়। নিউ টাউনের ফ্ল্যাটেই এমপিকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ টুকরা টুকরা করে গুম করা হয়।