ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ড যাকে পরিকল্পনাকারী বলা হচ্ছে, সেই আক্তারুজ্জামান শাহীন ঘটনার আগেই পাঁচ দফায় আড়াই কোটি টাকা দিয়েছিলেন খুনিদের। এই টাকা নিয়েছেন পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। তিনি বাকি খুনিদের টাকা ভাগ করে দিয়েছেন।
শিমুল কলকাতার পুলিশ সদস্যদের জানিয়েছেন, অর্থের বিনিময়ে আনারকে হত্যা করা হয়েছে। পাওনা টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেই তাকে ফ্ল্যাটে নেওয়া হয়। শিলাস্তি রহমানকেও ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
শিলাস্তিকে দিয়ে আনারের আপত্তিকর ছবি তোলা হয়েছে। খুন করার পরিকল্পনা করেই আনারকে তারা কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু খুনের আগে তার কাছ থেকে কিছু অর্থ আদায় করা যায় কি না, এ জন্য ব্ল্যাকমেলের চেষ্টাও করা হয়েছে। কিন্তু অচেতন হয়ে গেলে আর ব্ল্যাকমেল করা যায়নি। পরে বালিশচাপা দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। আনারকে হত্যার সময় ওই কক্ষে তার সঙ্গে ফয়সাল, মুস্তাফিজুর, সিয়াম জিহাদসহ আরও কয়েকজন ছিল। প্রথমে লাশ গুমের জন্য হাড়-মাংস আলাদা করা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের পর কলকাতা পুলিশের প্রতিনিধিদলটি শনিবার চলে গেছে।
আনার হত্যাকাণ্ডটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও কলকাতা পুলিশ। বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হওয়া শিমুল ভূঁইয়াসহ তিনজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া জিহাদ হাওলাদারকেও রিমান্ডে নিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানা গেছে, রিমান্ডে থাকা আসামিদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। জিহাদ হাওলাদারের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তার তথ্য অনুযায়ী, এমপি আনারকে হত্যা করার পর মরদেহ ৮০ টুকরা করা হয়। টুকরাগুলো ছোট পলিথিনে রাখা হয়। কিছু মাংস কিমা করা হয়। মাথা দুই ভাগ করে কিমার মতো করা হয়। সেসব বাথরুমের কমোডে ফেলা হয়। বাকিগুলো ফেলা হয়েছে খাল বা অন্য কোনো জলাশয়ে।