প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “জাতির পিতা এ দেশে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। সেই সংগ্রামের পথ ধরেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা এ দেশের খেলাধুলার উন্নয়নের জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। আমাদের পরিবার সব সময় ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে জড়িত ছিল। কামাল সব সময় খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চায় অগ্রণী ভূমিকা রাখত।”
শনিবার (৫ আগস্ট) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২৩ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “এ মাসটা আমাদের শোকের মাস। এ মাসে কামালের জন্মদিন। কামাল আমার ছোট, আমরা পিঠাপিঠি দুই ভাই-বোন। সেই সঙ্গে খেলার সাথি, আন্দোলন সংগ্রামেও একসঙ্গে ছিলাম। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে তার যে অবদান রয়েছে, সেটা চিরদিন মানুষ স্মরণ করবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ক্রীড়া সেবীদের কল্যাণে আপনারা এই ফাউন্ডেশনে (জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ) অনুদান দিবেন। কারণ, অনেক খেলোয়াড় অসুস্থ্য হয়ে পড়ে, তাদের চিকিৎসার সুযোগ থাকে না। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। আমি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম না তখনও চেষ্টা করেছি এবং এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
অনেক গরিব পরিবারের ছেলে-মেয়েরা স্বর্ণ জয় করে নিয়ে আসে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা যে বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণপদক নিয়ে আসে এটা কম কথা না। সেক্ষেত্রে আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করি। যাতে তারা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে পারে। একটা বয়সের পর তারা আর খেলাধুলা করতে পারে না। তাদের পরবর্তী জীবনটা কেমন হবে? সেজন্য আমি বলব, আমাদের যারা ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক-বীমায় আছেন, তাদের চাকুরির ব্যবস্থাটা করে দেবেন।”
আমি বেসরকারি খাতে অনেক কিছু করে দিয়েছি, বেসরকারি খাত অনেক শক্তিশালী হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেখানে যারা ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে সংযুক্ত এমন অবসর ব্যক্তিদের চাকুরি দেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশের মেয়েরা যদি এভারেস্ট বিজয় করতে পারে, খেলাধুলায় এত উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখতে পারে, এতে তো বাংলাদেশেরই সুনাম বাড়বে।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েরা সীমিত সুযোগের মধ্য দিয়েও যথেষ্ট সুনাম বয়ে আনছে। সুনাম বৃদ্ধির জন্যও আমাদের দরকার তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করা। সাংস্কৃতিক চর্চা এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রে যেমন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা লাগে, তেমনি বেসরকারি খাতে যারা আছেন তাদেরও পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন আছে। পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এগুলো বিকশিত করতে পারে না। সারাদেশে অনেক মেধা লুকিয়ে আছে। তাদের খুঁজে বের করুন। তারা বিশ্বে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।”
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবসহ মন্ত্রীপরিষদের কর্মকর্তারা।
এ সময় দেশের ক্রীড়াঙ্গণে খ্যাতনামা ১০ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠানকে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ দেওয়া হয়।
পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন, আজীবন সম্মাননা: আবদুস সাদেক, ক্রীড়াবিদ: সাবিনা খাতুন, তাসকিন আহমেদ, জিয়ারুল ইসলাম, উদীয়মান ক্রীড়াবিদ: মুহতাসিন আহমেদ হৃদয়, আমিরুল ইসলাম, ক্রীড়া সংগঠক: মালা রানী সরকার, ফজলুল ইসলাম, ক্রীড়া সাংবাদিক: খন্দকার তারেক মো. নুরুল্লাহ, ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার: আতাহার আলী খান। ক্রীড়া ফেডারেশন: বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশন, পৃষ্ঠপোষক: বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)।