আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, “শেখ হাসিনা যেভাবে তার বাবার হত্যাকারীদের খুঁজে খুঁজে দেশে এনে শাস্তি দিয়েছেন, সেভাবে এই অন্তর্বর্তী সরকার আইনি প্রসেসে তাকে দেশে এনে বিচার করবে। এজন্য যতরকম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাপ প্রয়োগ করা সম্ভব তা অন্তর্বর্তী সরকার করছে।”
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির (ইবিসাস) যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, “জুলাইয়ের বিপ্লবের মাধ্যমে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রাষ্ট্র সংস্কার। তবে আমরা দেখছি এমন এমন কাজ হচ্ছে যার কারণে মানুষ ভাবছে আমাদের বিপ্লবটা ব্যাহত হয়ে যাচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে না বরং জুলাই বিপ্লব যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে হয়েছে তা বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করে যাচ্ছে।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, “জন আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন আপনারা খুব শর্ট টার্মে দেখছেন এজন্য অনেকে চিন্তাশীল হয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের বলব, পূর্বের ইন্টেরিম সরকারের সময়কালের সঙ্গে তুলনা করে দেখেন আমরা অভূতপূর্ব কাজ করেছি কিনা। একটা ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে মাত্র ৫ মাসে এই সরকার স্থিতিশীলতায় নিয়ে এসেছে। অপরাধ প্রবণতা, রাজনৈতিক সহিংসতা কমে আসছে। কয়েকটা জায়গায় যদিও ব্যত্যয় ঘটছে কিন্তু তার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
শফিকুল আলম বলেন, “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এখানে অর্ধভাগ ছাত্রী পড়াশোনা করে তা খুবই ভালো ইমেজ। আবার ডকুমেন্টারিতে দেখলাম আন্দোলনে মেয়েরা নেতৃত্ব দিয়েছে। আন্দোলনে এ বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করেছেন। এই ইমেজ বিশ্বকে জানাতে হবে। ইমেজের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জড়িত। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে এ কাজ করবেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণে কাজ করতে হবে। সর্বোপরি সবার উচিত শহীদদের মূল্যায়ন করা। যে হলগুলোর নাম স্বৈরাচারের নামে রয়ে গেছে।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, “আমি মনে করি, অতি দ্রুত সেগুলো পরিবর্তন করে এ অঞ্চলের শহীদদের নামে রাখা। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের বীরদের স্মরণ করতে পারব। কুষ্টিয়াতে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের নামে শহীদ মিনার করা উচিত, তাদের গল্প বলা উচিত। প্রয়োজনে প্রজেক্ট করে তাদের নামগুলো ক্যাম্পাসে লাগিয়ে দেওয়া উচিত।”
শফিকুল আলম আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনের ফসল কমিশনের রিপোর্ট। নতুন বাংলাদেশ গড়তে কমিশনের মাধ্যমে আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে। আপনারা এগুলো পড়ুন ও ক্যাম্পাসে এসব নিয়ে বিতর্ক করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো এগুলো নিয়ে ডিবেট করুন। এর মাধ্যমে এমন নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করুন যাতে এর ওপর এ দেশ আগামী একশো বছর টিকে থাকবে। এটা না করলে আবার শেখতন্ত্রের মতো গুটি কয়েক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা থেকে যাবে।”