শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরানো (প্রত্যর্পণ) হবে কি না, এমন প্রশ্নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “কেন হবে না? অপরাধ করে থাকলে তাকে (শেখ হাসিনা) ফিরিয়ে (প্রত্যর্পণ) এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।”
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে করা প্রশ্নে ড. ইউনূস এ কথা বলেন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। পরে ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে কবে নির্বাচন হবে, তার কোনো সময়সীমা তার কাছে নেই। যে কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা সামনের মাসগুলোতে সংস্কার সুপারিশ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারপর নির্বাচনের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করা হবে।”
ড. ইউনূস জানান, নির্বাচনে দাঁড়ানোর কোনো পরিকল্পনা তার নেই। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আমাকে দেখে কি মনে হয়, আমি নির্বাচনে লড়ব?”
নিউইয়র্কে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস আয়োজিত ‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক সম্মেলনে অংশ নেন ড. ইউনূস। সম্মেলনে তিনি বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ব বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আটকে থাকবে, ততক্ষণ জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি কার্যকর হবে না।”
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সীমিত করার লক্ষ্যে ‘প্যারিস চুক্তি’ করা হয়। বৈশ্বিক এই চুক্তি ২০১৬ সালে কার্যকর হয়।
অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বলেন, “এই ব্যবস্থা (অর্থনৈতিক ব্যবস্থা) সর্বাধিক মুনাফাকেন্দ্রিক। ব্যবস্থাটি একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর জন্য সম্পদ তৈরি করছে। এটি ব্যাপক বর্জ্য উৎপন্ন করছে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করেছি, তা এই গ্রহ ধ্বংসের মূল।”
তিনি বলেন, “মানুষ একটি ‘আত্মবিনাশী সভ্যতা’ তৈরি করেছে।”
ড. ইউনূস বলেন, “চুক্তিতে যে পরিবর্তনই করা হোক না কেন, বিশ্বের মৌলিক ব্যবস্থাগুলোকে নতুন করে না সাজানো পর্যন্ত তা কোনো পার্থক্য বয়ে আনবে না।”
তিনি বলেন, “ধনী দেশগুলো মাধ্যমে হওয়া জলবায়ুর ক্ষতির বোঝা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর বহন করা উচিত নয়।”
ক্ষুদ্রঋণের পথিকৃৎ ড. ইউনূস বলেন, “আপনারা আমাদের ওপর যেসব ধ্বংসের ভার চাপিয়েছেন, তা কেন আমরা বহন করব?”
ড. ইউনূস বলেন, “ক্ষতির কারণ আপনারা, আর ফলাফল ভোগ করছি আমরা।”