• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘হিন্দুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নতুন ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা’


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
‘হিন্দুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নতুন ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা’
বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছবি : প্রতিনিধি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতে বসে হিন্দু ভাইদের ঢাল বানিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে শেখ হাসিনা। যখনি তারা হারতে থাকবে, জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, নির্বাচনে হেরে যাবে, আন্দোলনে হেরে যাবে তখনই তারা বলবে যে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে, লুটপাট হচ্ছে। অথচ শত শত বছর ধরে এই বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান মিলে একসঙ্গে বসবাস করে আসছে।”

মঙ্গলবার(১৩ আগস্ট) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে বিএনপি আয়োজিত ঐক্য ও সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা একে-অপরের বাড়িতে বিয়ে, পৌষ পার্বণসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাই। একে-অপরের বাড়িতে বাতাশা, ক্ষির পায়েস খাই। এই যে এক্য, এতে তারা ফাটল ধরাতে চায়। তারা যত ষড়যন্ত্রই করুক, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করতে হবে।”

উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আপনারা জানেন, প্রায় ১৫ বছর আমরা একটা স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, ভয়াবহ নির্যাতনকারী শাসক গোষ্ঠীর দ্বারা নির্যাতিত, নিপীড়িত। আমাদের প্রায় ৭০০ নেতাকর্মী গুম হয়েছে। প্রায় হাজার খানিক নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নগুলোর মতো এই ইউনিয়নের হাজারও নেতাকর্মী মামলা খেয়েছেন। গণ-গ্রেপ্তার করে এই সরকার ১৫ বছর কাটিয়েছে। প্রায় ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এত নির্যাতনের পরও আপনারা কখনো হাল ছাড়েননি। এবারও আমাদের ছাত্ররা, আমাদের সন্তানেরা যখন আন্দোলন শুরু করল, তখন সরকার প্রায় ৬ জনকে হত্যা করেছে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “পুলিশ যখন নিরীহ ছেলেদের গুলি চালাল, তখন শিক্ষার্থীরা গর্জে উঠল। সান্ধ্য আইন চালু করা হলো। কিন্তু তাকে অগ্রাহ্য করে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামল। অসংখ্য ছেলে যখন মারা গেল, তখন তাদের বাবা-মারাও রাস্তায় নেমে এলো। ঠাকুরগাঁওয়ে ৪ আগস্ট হাজারও নেতাকর্মী বড় মাঠে একত্র হয়ে আন্দোলন করেছেন।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এসবের মধ্যে একটি ঘটনা চোখে পড়েছে, যেটা হলো লাখ লাখ মানুষ, ছেলে, মেয়ে, শিশু, বৃদ্ধ সবাই রাস্তায় নেমে বুক পেতে দিয়ে বলেছে, গুলি কর, আমরা রাস্তা ছেড়ে যাব না। আপনাদের রংপুরের সাঈদের কথা মনে আছে, মুগ্ধর কথা মনে আছে নিশ্চয়। এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের পুলিশ তাদের গুলি করে মারল। যেভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে, আমাদের সাধারণ লোকজনের ওপরে যা করা হয়েছে, ভাষায় তা বর্ণনা করা যাবে না।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আল্লাহকে অস্বীকার করে জনগণের ওপর যে অত্যাচার করেছে, আমাদের ওপর অত্যাচার করেছে, আলেম ওলামাদের ফাঁসি পর্যন্ত দিয়েছে। কারাগারে নির্যাতিত করে রেখেছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের দিনের পর দিন কারাগারে রেখেছে, আমিও কারাগারে ছিলাম অনেকদিন। তারপরও শেষ রক্ষা হয় নাই, পালিয়ে যেতে হয়েছে এবং দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। এখন আশ্রয় নিয়েছে দিল্লিতে। ব্রিটেন অস্বীকার করেছে, আমেরিকা বলেছে, নেবে না। এখন পর্যন্ত ভারতও অফিসিয়ালি আশ্রয় দিতে রাজি হয়নি, এখন পর্যন্ত তিনি সেখানে আছেন।”

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “যখন মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়, তখন আর মানুষ থেমে থাকে না। হাসিনা সরকার ৯১ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে, ব্যাংক থেকে প্রায় ৯৩ হাজার কোটি টাকা নাই। এই টাকাগুলো তারা বিদেশে পাচার করেছে, আর কিছু টাকা বাংলাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার কাজে ব্যবহার করছে। আমি ধন্যবাদ, জানাতে চাই দেশ রক্ষায় ছাত্র ভাইদের, যারা এ দেশকে রক্ষা করেছে। সেইসঙ্গে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। যারা প্রয়োজনের মধ্যে জনগণের পাশে এসে দাঁড়ায়।” 

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!