বিএনপি-জামায়াতের কোনো আক্কেল নাই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি বলেছেন, “যুবলীগকে দেখলে ভয়ে শয়তানও পালিয়ে যায়, আবার আপনাদের (বিএনপি-জামায়াতের নেতারা) মতো শয়তানরা এক দফার ভয় দেখান।”
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (কেআইবি) খামার বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, “বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা কাদের ভয় দেখায়। ওদের কি কোনো আক্কেল নাই। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করার জন্য যুবলীগই যথেষ্ট।”
তিনি বলেন, ’৭৫-এর খুনি ও ২১ আগস্টের খুনিরা সব এক। জিয়াউর রহমান ২১ বার সেনাবাহিনীতে ক্যু করেছেন। এই দলটি খুনির দল। বঙ্গবন্ধু ও জেলখানায় জাতীয় ৪ নেতার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী জিয়াউর রহমান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, “হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র হলো বিএনপি-জামাতের মূল লক্ষ্য। তারা জানে ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তারা ভোট ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। দেশকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আসতে হবে।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে। কীভাবে মানুষের অধিকার আদায় করতে হয়, সেই দীক্ষা শেখ হাসিনা দিয়েছেন।”
বাহাউদ্দিন নাছিম আরও বলেন, “শেখ হাসিনার প্রতিষ্ঠিত অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা ধ্বংস করতে চায়। পঁচাত্তরের ঘাতকচক্র ও ২০০৪ সালের খুনিরা এক ও অভিন্ন। শেখ হাসিনা আমাদের প্রেরণার উৎস, আমাদের বাতিঘর। সেই ঘাতক চক্র আবারও, ষড়যন্ত্র করছে দেশের বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশকে পাকিস্তানি করার ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে আমরা দেশ ছেড়ে দিতে পারি না। দেশকে যারা ধ্বংস করতে চায় তাদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা, শেখ হাসিনার সৈনিকেরা বসতে পারে না। এই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাদের রাজপথে প্রতিহত করতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক, বাংলাদেশের মর্যাদাকে যিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুপরিচিত করেছেন, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাই।”
যুবলীগের উদ্দেশে মাকসুদ কামাল বলেন, “সামনের নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের উন্নয়নমূলক কাজ ও তথ্যবহুল চিত্র যদি তুলে ধরতে পারেন তাহলে মানুষের মনোজগতে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসা যাবে। স্লোগানের পাশাপাশি বিপ্লবী পরিবর্তনের পাশাপাশি, তথ্যবহুল বক্তব্যই হবে আমাদের আগামী দিনের হাতিয়ার।”
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, “একাধিক দুর্লভ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী আমাদের নেত্রী। তার অন্যতম হলো, পিতার প্রতি বিরল ভালোবাসার উদাহরণ স্থাপন করা। এই রকম একজন মানবিক এবং সংবেদনশীল ব্যক্তি, তিনি সারা জীবন দেখেছেন তার বাবাকে এ দেশের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করতে। তিনি শিশু বয়সে নিজে পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সেই মানুষটির ১৫ আগস্টের শোক বহন করতে হয় আজীবন ধরে। বঙ্গবন্ধু পরিবার রক্ত দিয়ে ১৫ আগস্টে যে মূল্য দিয়েছে তাতে আজীবন জাতি বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রতি ঋণী থাকবে।”
পরশ আরও বলেন, “শেখ হাসিনা জন্ম না নিলে আমরা গণতন্ত্র পেতাম না, সামাজিক ন্যায় বিচার পেতাম না, অর্থনৈতিক মুক্তি পেতাম না, ভোট ও ভাতের অধিকার পেতাম না, একটা মর্যাদাশীল দেশও পেতাম না এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হত না। আমরা এখন গর্ব করে বলি যে এ দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রায় ৪০ বিলিয়ন টাকা বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাঙালি জাতি পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন আমাদের নেত্রী, শেখ হাসিনা।”
আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।