• ঢাকা
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘সমুদ্রগামী জাহাজ ও নাবিকরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখছে’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৪, ০২:৫৫ পিএম
‘সমুদ্রগামী জাহাজ ও নাবিকরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখছে’
বক্তব্য রাখছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত

দেশের সমুদ্রগামী জাহাজ ও জাহাজ সংশ্লিষ্টরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বড় ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে মেরিটাইম শিক্ষা ও সুনীল অর্থনীতির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সমুদ্রে বাংলাদেশের অধিকার, আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা, সমুদ্র আইন, সমুদ্রে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল, রাজনৈতিক সমুদ্রসীমা, সমুদ্রের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভের জন্য মেরিটাইম শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।”

বুধবার (৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মেরিটাইম শিক্ষাব্যবস্থা ও সুনীল অর্থনীতি’ শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “মেরিন একাডেমি থেকে প্রশিক্ষিত ক্যাডেটরা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমুদ্রগামী জাহাজ ও জাহাজ সংশ্লিষ্ট চাকরিতে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখছেন। তারা সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরির পাশাপাশি জাহাজ নির্মাণ ও মেরামত, বন্দর ব্যবস্থাপনা, বন্দর পরিচালনা ও প্রশিক্ষকসহ বিভিন্ন শোর জবের মাধ্যমেও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।”

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশি সীফেয়ারারদের চাহিদার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০২১ সালে পাবনা, বরিশাল, সিলেট এবং রংপুর চারটি মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেশের প্রতিটি বিভাগে মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরের বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে নাবিকদের (রেটিং) প্রশিক্ষণের জন্য দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী ও মেহেরপুর জেলায় নতুন চারটি ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মেরিনারদের উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার বিচক্ষণতায় চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) প্রতিষ্ঠা করেন ও বিএসসির জন্য ১৯টি জাহাজ সংগ্রহ করেন। দেশের নৌপরিবহন ও মেরিটাইম খাতে বিদেশি নাবিকের স্থলে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত আন্তর্জাতিক মানের দেশি নাবিক তৈরির লক্ষ্যে জাতির পিতা তার প্রতিষ্ঠিত মেরিন একাডেমির মানোন্নয়নের জন্য ব্রিটিশ কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি উন্নয়ন পরিকল্পনা, ১৯৭৩ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেন। ১৯৭২-২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, চট্টগ্রাম থেকে মোট ৫ হাজার ৩৬৬ জন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।”

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “নারীর ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় উক্ত একাডেমির ৪৮তম ব্যাচ থেকে নারী ক্যাডেট ভর্তি করা হচ্ছে এবং প্রশিক্ষিত নারী ক্যাডেটরা সুনামের সঙ্গে বিভিন্ন সমুদ্রগামী জাহাজে কর্মরত রয়েছেন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত  বাংলাদেশি জাহাজে দুইজন নারী ক্যাডেট ছিলেন। তারা সেসময় সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন; যা অন্য নারী ক্যাডেটদের কাছে অনুকরণীয়।”

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনার সময়ে মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা জয় করেন। এর ফলে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল ও চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৪৫ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহিসোপানের তলদেশে সব ধরনের প্রাণিজ-অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রে বিরোধপূর্ণ ১৭টি ব্লকের ১২টি পেয়েছে বাংলাদেশ এবং ভারতের কাছ থেকে দাবি করা ১০টি ব্লকের সবগুলোই পেয়েছে বাংলাদেশ। এসব ব্লক থেকে প্রায় ৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, “সুনীল অর্থনীতির চারটি ক্ষেত্র যেমন, তেল ও গ্যাস উত্তোলন, মৎস্য আহরণ, বন্দর সম্প্রসারণ এবং পর্যটন খাতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করলে বছরে বাংলাদেশের পক্ষে ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব। বাংলাদেশ বর্তমানে উপকূল থেকে মাত্র ৩৫-৪০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে মৎস্য আহরণ করে থাকে।” 

Link copied!