ভক্তি-আরাধনায় রাজধানীতে উদযাপিত হয়ে গেল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাণী অর্চনার মধ্য দিয়ে সরস্বতী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। পরে দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং সবশেষে ভক্ত ও পুণ্যার্থীদের মাঝে প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে এই পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
জানা যায়, স্বরসতী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী। তার আরাধনাকে কেন্দ্র করে ধর্মপ্রাণ সনাতন গোষ্ঠী এই পূজার আয়োজন করে থাকেন। প্রতি বছর শাস্ত্রীয় বিধান মতে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে এই পূজার আয়োজন করা হয়। এই তিথি সাধারণত বাংলা বর্ষপুঞ্জির মাঘ মাসেই হয়ে থাকে। তবে কখনো কখনো ফাল্গুণ মাসেও হয়।
সরস্বতী বিদ্যার দেবী হওয়ায় তার পূজার আয়োজন সাধারণত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাই বেশি করে থাকেন। এই পূজা আয়োজনকে ঘিরে তিথিকে গুরত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। এই তিথি শ্রীপঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত।
সরেজমিনে ঢাকার কেন্দ্রীয় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৬টায় দেবী সরস্বতীর প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। পূজার সকল অনুসঙ্গ সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করতে থাকেন আয়োজকরা। এর মধ্যে ভক্ত-পূর্ণ্যার্থী মন্দিরে আসতে শুরু করেন। পরে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে সকাল ৯টায় পূজা শুরু হয়। এরপর ভক্ত-পূর্ণ্যার্থীরা দেবি সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। পরে তাদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
শিমুল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “ছোট বেলা থেকেই বাবা-মায়ের কাছে শিখেছি সরস্বতী বিদ্যার দেবি। সেই হিসেবেই মেনে আসছি। আজ বছর ঘুরে মা এসেছেন। ভালোভাবে যেন পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারি এই কামনা করছি। মায়ের কাছে তাই চেয়েছি।”
রিম্পা রানী দাস নামের একজন বলেন, “যখন শিক্ষার্থী ছিলাম তখনো আসতাম আর এখন চাকরি করি, তবুও আসছি। যতদিন বাঁচব ততদিন আসব। ঠাকুরের কাছে আসতে তো মানা নেই। মা যেহেতু বিদ্যার দেবি, সেহেতু শিক্ষার্থীরা আসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সব বয়সের মানুষই আসেন।”
পায়েল পাল নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আজকে মায়ের কাছে চাইব তিনি যেন শিক্ষা জীবনে সবসময় আমার সঙ্গে থাকেন।”
কাজল সরকার বলেন, “সবার সঙ্গে পুস্পাঞ্জলী দিলাম, অনেক ভালো লাগছে। সবাইকে ভালো রাখুক এই কামনা করি।”