বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার পাঁচ আসামির পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানি করতে এসে বিরত থেকেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হচ্ছেন এমন সংবাদে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের অনুরোধে শুনানি থেকে বিরত থাকেন তিনি।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় একাধিক প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। পরে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ট্রাইব্যুনালে স্থাপিত হাজতখানা থেকে এজলাসে তোলা হয় আসামিদের।
বেলা ১১টার দিকে তিন বিচারপতি আসনে বসলে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আদালতকে বলেন, আজ আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী শুনানি করতে এসেছেন। তবে তিনি রাষ্ট্রীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে বসতে যাচ্ছেন বলে জেনেছি। ২-১ দিনের মধ্যেই হয়ত সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করবেন। তাই তিনি আসামিপক্ষে শুনানি করলে এটা হবে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট।
এসময় তাজুল ইসলাম তাকে আসামিপক্ষে শুনানি না করতে অনুরোধ জানান।
এরপর এহসানুল হক সমাজী আদালতকে বলেন, “আমি এখনো ফরমাল কোনো লেটার পাইনি। ফরমাল লেটার পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলতে পারছি না। এছাড়াও যে পদে আমাকে নির্বাচিত করা হবে সেটা আমি গ্রহণ করি কি না তাও ভাববার বিষয়।”
এ সময় বিচারক জানতে চান কোন আসামির পক্ষে তিনি এসেছেন। উত্তরে সমাজী পাঁচ জন আসামির নাম বলেন। এসময় তিনি শুনানি না করে আরেক অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলুকে দায়িত্ব দেন।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। তার আগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে গারদখানা থেকে তাদের এজলাসে তোলা হয়।
এদিন সকাল ১০টার দিকে তাদের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা ৪৬ জনের মধ্যে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ১৩ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে তোলা হলো।
১৩ আসামি হলেন সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, শাজাহান খান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, সালমান এফ রহমান, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
এদিকে অসুস্থ থাকায় ড. আব্দুর রাজ্জাককে আনা হয়নি বলে জানা গেছে।