• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শাড়ি বেচলে বেতন-বোনাস


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৪, ০৮:২৫ পিএম
শাড়ি বেচলে বেতন-বোনাস
শাড়ির দোকান। ছবি : সংগৃহীত

দুপুর গড়িয়ে বিকেল। ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের শাড়ির দোকানগুলো তখনো ফাঁকা। ক্রেতাদের দেখা নেই বললেই চলে। দু-একজনকে দেখলেই বিক্রেতারা ডাকাডাকি করছেন। তবে ক্রেতাদের মধ্যে ঢিলেঢালা ভাব। ঠিক এমন মুহূর্তে একটি শাড়ির দোকানে আসা দুইজন ক্রেতাকে নিয়ে দারুণ ব্যতিব্যস্ত এক তরুণ বিক্রেতা। ডেকে নিয়ে একের পর এক শাড়ি দেখিয়ে চলছেন। প্রায় দুই ডজন শাড়ি দেখানোর পর তাদের একটি পছন্দ হলো। এসময় দাম জানতে চাইতেই বিক্রেতার মুখে চওড়া হাসি।

ওই তরুণ বিক্রেতা খশি হয়ে বললেন, “ম্যাম, আপনি আমাদের প্রথম কাস্টমার। একেবারে কেনা দামেই শাড়িটা দিয়ে দেবো। প্লিজ, না বলবেন না।” 

ওই নারী ক্রেতা তো অবাক। ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বললেন, “প্রথম কাস্টমার মানে? এর আগে বেচাবিক্রি হয়নি?”

বিক্রেতা বিষণ্ণ মুখে বললেন, “একদম বেচাবিক্রি নেই। আপনি অন্তত একটা শাড়ি যেন পছন্দ করেন, সেজন্যই এতগুলো দেখালাম। প্লিজ, শাড়িটি কেনেন ম্যাম।”  

জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্রেতা বললেন, “কয়েক দিনে দোকানে যে বিক্রি হয়েছে, এসবের টাকা মালিক নিয়ে গেছেন। বলে দিয়েছেন, ঈদের দুই দিনে যা বিক্রি হবে, তা থেকেই আমাদের বেতন-বোনাস নিতে হবে। যদি এই দুই দিনে কোনো বেচাকেনা না করতে পারি, তাহলে আমাদের ঈদের আনন্দ ‘মাটি’ হয়ে যাবে।”

বিক্রেতার কথায় অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেন ওই নারী।

ঈদ ঘিরে রাজধানীর শপিংমলগুলোতে বেচাকেনা চোখে পড়ার মতো হলেও ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের শাড়ির দোকানগুলোতে দেখা গেছে বিপরীত চিত্র। প্রথমদিকে বেচাকেনা কিছুটা হলেও, ঈদের আগ মুহূর্তে একেবারেই হতাশ বিক্রেতারা। দোকানের কর্মচারীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ক্রেতাদের জন্য। যে দু-একজন ক্রেতা মার্কেটে ঢুকলে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন বিক্রেতারা। কোনো কোনো দোকানে আবার নির্বিকার বসে আছেন সবাই। কেউ কেউ সময় পার করছেন খোশগল্পে।

কথা হয় গ্রিন ক্লথস স্টোরের বিক্রেতাদের সঙ্গে। তারা জানালেন, শাড়ির দাম যতটা বেড়েছে সে অনুযায়ী বিক্রি কম হলেও তা একেবারেই হতাশাজনক। পনের রমজানের পরে বিক্রি বেশি হলেও শেষ সময়ে এসে নেই বললেই চলে। 

নিও আলহাম শাড়িজ দোকানের কর্মচারীরা জানালেন, আজ (মঙ্গলবার) দুপুর অবধি কোনো শাড়িই বেচতে পারিনি। যে দু-একজন ক্রেতা এসেছেন, তারা দরদাম করেই চলে গেছেন। কেউ কেউ এতই কম দাম দিতে চেয়েছেন যে, বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। তবে চাঁদরাত পর্যন্ত অপেক্ষা থাকবে। 

Link copied!