গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। যার মধ্যে শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ উদ্ধারের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।
সোমবার (৩ জুন) অর্থনীতি সমিতির অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৪-২৫ : উন্নত বাংলাদেশ অভিমুখী বাজেট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন সমিতির সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম এ সুপারিশ করেছেন।
সংগঠনটি বলছে, ১৯৭২-৭৩ থেকে ২০২২-২৩ অর্থ বছর এই গত ৫০ বছরে দেশ থেকে যে অর্থ পাচার হয়েছে তা উদ্ধারের জন্য শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ সুপারিশ করা হয়েছে। যার পরিমাণ হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। আর রাজস্ব খাত থেকে আসবে ১০ লাখ ২৪ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা। এছাড়াও এই সময়ের মধ্যে কালো টাকা এক কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আসন্ন বাজেটে মাত্র দশমিক ৯৮ শতাংশ উদ্ধারের সুপারিশ করা হয়েছে। সেখান থেকে আহরণ হবে ১০ হাজার কোটি টাকা।
কালো টাকা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, “কালো টাকা উদ্ধারে রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার। অর্থনীতিকে পরিচালিত করে রাজনীতি। সঠিক লাইনে ব্যবস্থা নিলে পদ্ধতি আছে। ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম অন্যতম। এটা শতভাগ করতে পারলে কালো টাকার অবস্থান বের করা সম্ভব।”
সমিতির সাবেক সভাপতি আবুল বারকাত বলেন, “কালো টাকা বহু জায়গায় অবস্থান করছে। অর্থ মন্ত্রণালয় একটি গবেষণা করেছিল, যা প্রকাশ হয়নি। সেখানে বলা হয়েছিল বাংলাদেশে কালো টাকার পরিমাণ জিডিপির ৩৩ থেকে ৬৬ শতাংশ হতে পারে। অর্থনীতি সমিতির হিসাবে প্রতি বছরে গড়ে ৩৩ শতাংশের মতো কালো টাকার হিসাব দিয়েছে।”
অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবে আয়ের উৎস সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেটের মধ্যে আয়ের মধ্যে মুনাফা ও মূলধনের ওপর ২ লাখ ৬০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, সম্পদ কর ২ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা, অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর ৭৫ হাজার ২০০ কোটি, বিলাসী দ্রব্যে আমদানি শুল্ক ৮৫ হাজার, মাদক শুল্ক ৫ হাজার ২০০ কোটি, কালো টাকা থেকে প্রাপ্তি ১০ হাজার কোটি ও অর্থ পাচার উদ্ধার থেকে প্রাপ্তি ৫ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে বিকল্প বাজেটে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৪৯৬ কোটি আর রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ ২৪ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা।
অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবনায় বলা হয়, ঘোষিত বাজেট সম্প্রসারণশীল বাজেট। যেখানে সুপারিশ সংখ্যা ছিল ৩৬১টি। এখানে ২৪টি মূল পয়েন্টের উপস্থাপন করা হয়েছে। বিকল্প বাজেট সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও কনফারেন্সে দেশের ৬৪টি জেলা, ১৩৫টি উপজেলা এবং ৪৫টি ইউনিয়ন হতে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি যুক্ত রয়েছেন।
এর আগে গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জন্য ২০ লাখ ৯৪ হাজার ১১২ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেছিল বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।