• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বাড়তে পারে চালের দাম


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৩, ১০:০৮ পিএম
সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বাড়তে পারে চালের দাম

আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে দেশে গত দুই মৌসুম আমন ও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সদ্যবিদায়ী বোরো মৌসুম এবং হাওড়ের ধান বাজারে চলে আসায় পর্যাপ্ত চালের মজুত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গত দুই মাস ধরেই স্থিতিশীল রয়েছে দেশের চালের বাজার। তবে ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে চালের দাম বাড়ানোর সুযোগ খুঁজছে সিন্ডিকেট। ফলে অস্থির হয়ে উঠতে পারে দেশের চালের বাজার। এমনটি আশঙ্কা করছেন চাল ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, আগে বাংলাদেশ ২২ থেকে ২৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করলেও এখন তা ৮ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টনে নামিয়ে আনা হয়েছে। গত বছর তিন মৌসুমে বাংলাদেশে প্রায় চার কোটি মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে।

কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সরকারের কাছে অনেক চাল রয়েছে। খাদ্য মজুতের বিপরীতে আমাদের খাদ্যমন্ত্রী একটি আইন পাস করিয়েছেন। আমরা যদি সেই আইন মেনে চলি, তাহলে দেশের চালের বাজারে ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব পড়বে না। খাদ্যেরও ঘাটতি হবে না।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৫০ কেজির প্রতি বস্তা মোটা সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি বস্তা ঝিরাশাইল ২ হাজার ৮০০ টাকা, পারী সেদ্ধ ২ হাজার ৫৫০ টাকা, স্বর্ণা ২ হাজার ৫০০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং মিনিকেট ২ হাজার ৪৫০ টাকা।

আর আতপ চালের মধ্যে ৫০ কেজি প্রতি বস্তা বেথি আতপ ২ হাজার ৪০০ টাকা, মিনিকেট ৩ হাজার টাকা, কাটারি ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং পাইজাম ২ হাজার ৫০০ টাকা।

তবে গত কয়েক বছর ধরে বেশ কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পগ্রুপ চালের ব্যবসা করায় বাজারে সিন্ডিকেট প্রথা শুরু হয়ে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠান বাজারের পরিবর্তে মোকাম থেকেই চাল সংগ্রহ করে। এমনকি কম শুল্কে আমদানি করা চাল প্রতিষ্ঠানগুলো কারসাজির মাধ্যমে বেশি দামে বিক্রি করেছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ অবস্থায় ভারতের এ নিষেধাজ্ঞার সুযোগে যাতে করপোরেট হাউজগুলো কোনো রকম চাল মজুত করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রশাসনের তদারকির কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ শুধু ভারত থেকেই চাল আমদানি করে না, মিয়ানমারের পাশাপাশি থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকেও প্রচুর পরিমাণে চাল দেশে আসে। কাজেই ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করলেও বিকল্প বাজার হিসেবে এখনও আছে অন্য ৩টি দেশ। সেই সঙ্গে দেশের মোকাম ও গুদামগুলোতে বোরো মৌসুমে উৎপাদিত চালের মজুত রয়েছে। তাই আগামীতে চাল নিয়ে সাধারণ ক্রেতারা যেন শঙ্কিত না হয়, এমনটাই বলছেন ব্যবসায়ীরা।

এর আগে, ২০ জুলাই বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত বাসমতী ছাড়া সব ধরনের চাল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মূলত বর্ষা মৌসুমে দেশটিতে ভারী বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ স্থিতিশীল ও মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।

সরকারের তথ্যনুযায়ী, গত ১৯ জুলাই পর্যন্ত বোরো মৌসুমে ১ লাখ ৫৮ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ধান এবং ৮ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৪ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।

Link copied!