কোনোভাবেই রিজার্ভের ওপর চাপ কমানো যাচ্ছে না। গত কয়েক মাস ধরে রিজার্ভ কমে ৩৭ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। এটিই গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন রেকর্ড।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই-আগস্টের বকেয়া (১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার) পরিশোধ করায় রিজার্ভ ৩৭ দশমিক ৬ বিলিয়নে নেমে আসে। গত বছরের ২৫ আগস্ট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৮ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে সাড়ে ১১ বিলিয়ন ডলার।
জানা গেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বিগত কয়েক মাস ধরে আমদানি ব্যয়ে বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ ঠিক রাখতে গিয়ে প্রচুর ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে রিজার্ভ কমে এসেছে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ দিন গত ৩০ জুন রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে আমদানির ক্ষেত্রে এলসি (ঋণপত্র) নিষ্পত্তি কমেছে ২৫ শতাংশ। আগস্টে এলসি বাবদ পরিশোধ হয়েছে ৫ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৬ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। ফেব্রুয়ারিতে ৬ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন, মার্চে ৭ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন, এপ্রিলে ৬ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন, মে- তে ৭ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ও জুন মাসে ৭ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “সাধারণত কোনো দেশে তিন মাসের আমদানি বিল পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা থাকলেই সেটিকে আদর্শ রিজার্ভ ধরা হয়। আমাদের বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের বেশি আমদানি বিল পরিশোধ করা সম্ভব। সুতরাং রিজার্ভ নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার আমদানিতে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করেছে। এতে আমদানি কমতে শুরু করেছে। রপ্তানি আয় বাড়ছে। পাশাপাশি সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। আর করোনার পর গত দেড় বছরে জনসম্পদ রপ্তানি বেড়েছে। এর ফলে সামনে রেমিট্যান্স সংগ্রহ আরও বেড়ে যাবে।”