পণ্য আমদানিতে অনিশ্চয়তা কাটতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। রিজার্ভ থেকে কোনো অর্থ ব্যয় না করেই গত দুই মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার (১১৯ টাকা হিসেবে ১৭ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা) ঋণ পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, “ডলার সংকট শুরু হওয়ার কারণে গেল ২ বছর ধরে এই ব্যয় সময়মতো পরিশোধ করা যায়নি। ফলশ্রুতিতে আদানি, কাফকোসহ, শেভরন ও বিপিসিকে সরবরাহকারী বেশকিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে সোয়া দুই বিলিয়ন ডলারের ওপরে বকেয়া পড়ে যায়। তবে, আশার খবর হলো, গেল দুই মাসে রিজার্ভে কোনো প্রকার হাত না দিয়েই, সেই বকেয়ার দেড় বিলিয়ন পরিশোধ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাকি অংশও ডিসেম্বরের মধ্যে শোধ করতে পারব বলে আশা করছি। আর এর মাধ্যমে আরও ইতিবাচক ধারায় ফিরবে দেশের অর্থনীতি।”
গভর্নর বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে সব দায় মেটানো শেষে আরও ইতিবাচক ধারায় ফিরবে দেশের অর্থনীতি। জ্বালানি তেল, গ্যাস, কয়লাসহ যাবতীয় পেট্রোলিয়াম পণ্যের প্রায় পুরোটাই বিভিন্ন উৎস থেকে আমাদের আমদানি করতে হয়। যার পেছনে সর্বশেষ অর্থবছরে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার।”
আহসান এইচ মনসুর বলেন, “দুই দশমিক ৫ বিলিয়নের মতো অনাদায়ী, অনিষ্পন্ন দায় ছিল সরকারের। সেটা ছিল ডলারের। সেটা আমরা কমিয়ে ৭০০ মিলিয়নে নিয়ে এসেছি। সারের জন্য প্রচুর টাকা দেওয়া হয়েছে, বিদ্যুতের জন্য দেওয়া হয়েছে, আদানি-শেভরনকে দেওয়া হয়েছে। সবার দেনাটা কিছুটা কমিয়ে আনা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য আগামী দুই মাসের মধ্যে দেনা জিরোতে নামিয়ে আনব। তখন বাজারে লিকুইডিটা আরও বাড়বে।”
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, “এসব বকেয়া পরিশোধের পর, চাপ কমবে আর্থিক ব্যবস্থাপনায়। যা গতি বাড়াবে সার্বিক কর্মকাণ্ডে। একই সঙ্গে, প্রস্তুতি চলছে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে আরও প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণ সংগ্রহের।”
এদিকে বর্তমানে ১০৩ বিলিয়নের বিদেশি ঋণ ও পরিশোধের ধারাবাহিক বাড়তি চাপে কিছুটা চিন্তিত গভর্নর। বিনিয়োগ, প্রবৃদ্ধি নিয়ে এই মুহূর্তে চিন্তা না করে, ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন তিনি।