সরবরাহ বাড়ায় বাজারে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। দু-একটি সবজি ছাড়া বেশির ভাগেরই দাম কমেছে ৫-১০ টাকা করে। এতে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতার।
বাজারের সবজি ব্যবসায়ী জালার মিয়া জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় অধিকাংশ সবজির দাম কমেছে ১০-১৫ টাকা। তবে দু-একটি সবজির দাম নতুন করে বেড়েছে। দাম বাড়া সবজিগুলোর মধ্যে টমেটো আর শসা উল্লেখযোগ্য।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু ৩০ টাকা কেজি, ফুল কপি এতি পিস ৪৫ (ছোট সাইজ) ২৫ টাকা, পেঁয়াজ দেশি ৪৫ টাকা। রসুন দেশি কেজি ১২০ টাকা, আদা কেজি ১২০ টাকা, ঢেঁড়শ কেজি ৩০ টাকা, ধনেপাতা ২৫০ গ্রাম ২০ টাকা, লম্বা বেগুন কেজি ৪০ টাকা, কাঁচকলা হালি ২০ টাকা, লাউ প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা কেজি ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি পিস (ছোট) ২৫ টাকা, বরবটি কেজি ৩০ টাকা। কাঁচা মরিচ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি, পটোল ৩০ টাকা কেজি, লেবু হালি ১০ টাকা। গাজর কেজি ৭০ টাকা, করল্লা কেজি ৪০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ২৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ২৫ টাকা, গোল বেগুন প্রতি কেজি ৪৫ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মুলা কেজি ৪০ টাকা, টমেটো দাম ৯০ টাকা, শসা ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ থাকায় বাজারে সব ধরনের শাকের দাম কমেছে। ব্যবসায়ী বলছেন, আগে সব ধরনের শাকের আঁটি প্রতি ২০ টাকা ২৫ টাকা দরে বিক্রি হতো। এখন সেগুলো ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল শাক আঁটি ১০ টাকা, পালংশাক ১৫ টাকা, লাউশাক ১৫ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের বাজার করতে আসা বেসরকারি কর্মকর্তা আবু তালহা বলেন, “সবজির বাজার মোটামুটি ঠিক আছে। গত সপ্তাহের তুলনায় কিছু কিছু সবজিতে দাম কমেছে। কিন্তু অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম তো কমেনি।”
আবু তালহা আরও বলেন, “সবজির দাম কমলেও আটা-ময়দা, চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। চালের দামে খুব বেশি হেরফের হয়নি।”
এদিকে পাইকারি দরে বয়লার ডিম হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা, দেশি ডিম হালি ৫০ টাকা, হাঁসের ডিম হালি ৫০-৫৫ টাকা, কিছুটা ডিমের দাম কম থাকায় স্বস্তিতে আছে ক্রেতারা।
অন্যদিকে গরুর মাংস কেজি ৭০০ টাকা, খাসি কেজি ৯০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৭০ টাকা, ব্রয়লার (কক লাল) কেজি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
ফলের বাজারে দাম বেশি থাকলেও আগের দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাইকারি বিক্রেতারা। আপেল কেজি প্রতি ২০০-২১০ টাকা, পেয়ারা কেজি ৫০ টাকা, আমড়া কেজি ৬০ টাকা , আম কেজি ৩২০, লাল আঙুর কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, জাম্বুরা প্রতি পিস ৪৫-৫০ টাকা।
এদিকে রাজধানীর বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। বিভিন্ন মাছের কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এমনকি ইলিশ মাছের কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী জামসেদ হোসেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “মাছের কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বড় সাইজের তেলাপিয়া আগে ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, তা বর্তমানে ২০০ টাকা কেজি, বড় রুই ৩৮০ টাকা যা আগে ছিল ৩৭০ টাকা, বড় কাতলা ৪০০ এবং সাড়ে ৫ কেজির ওপরে কাতলা ৪৫০ টাকা।”
ইলিশের বাজার কেমন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ছোট সাইজের ইলিশ ২ কেজি সাইজ ২ হাজার ৫০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাবদা বড় আকারভেদে ৭০০ টাকা, মাঝারি চিংড়ি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০, টেংরা ৬০০ টাকা, শিং ৫৫০ থেকে ৬৫০, আইড় ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।”
মাছ কিনতে আসা শারমিন নামের এক ক্রেতা বলেন, “শাকসবজির সঙ্গে চিংড়ি দিয়ে রান্না করলে বাচ্চারা একটু ভালো খায়। তবে বর্তমানে চিংড়ির কেজি ৭০০ টাকা। যা কয়েক দিন আগে ছিল ৬০০ টাকা। বাজারে নিত্যপণ্যের পাশাপাশি মাছের এমন লাগামহীন দামে স্বল্প আয়ের মানুষেরা অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে যদি বাজার মনিটরিং করা যায়, তাহলে মাছের দাম কিছু কমতে পারে পারে।”