কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে আলুর মৌসুম এখন শেষের দিকে হওয়ায় দাম কিছু বেশি থাকে। তবে এবার একেবারে চড়া দাম। শীত মৌসুমের নতুন আলু বাজারে না পর্যন্ত দাম কমবে না।
আলুর উৎপাদনকারী চাষিরা বলছেন, চলতি বছরে অতিবৃষ্টি ও বন্যায় দুই দফায় আলুর বীজ নষ্ট হয়েছে। ফলে সরবরাহ সংকট দেখা দেয় বাজারে। এতে বছর জুড়ে আলুর দামে ছিল অস্থিতিশীলতা।
দেশের বাজারে আলুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় দাম কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। ফলে পাশের দেশ থেকে আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) হিলি বন্দর দিয়ে একদিনেই ৭১ ট্রাকে করে ১৮১৮ টন আলু আমদানি হয়েছে। যা হিলি দিয়ে একদিনে সর্বোচ্চ বা রেকর্ড আলু আমদানি।
আলুর ব্যবসায়ীরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রতি কেজিতে আলুর দাম কমেছে চার টাকা। বিপুল আমদানির কারণে দাম কমে যাওয়ায় খুশি হয়েছেন বন্দরে আলু কিনতে আসা পাইকাররা। তবে খুচরা বাজারে আলু আমদানির সুফল পেতে কয়েকদিন লাগবে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা।
মূলত, দেশীয় আলুর সরবরাহ কমে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে আলুর বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠে। যে কারণে দাম সহনীয় পর্যায়ে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আলু আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে দেয় সরকার। গত ৫ সেপ্টেম্বর ২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ ও নিয়ন্ত্রণ শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়।
তবে সেপ্টেম্বর অক্টোবরে আলু আমদানি না হলেও সম্প্রতি দেশে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি শুরু করেছেন আমদানিকারকরা। প্রথম দিকে দুই থেকে তিন ট্রাক আমদানি হলেও পরে তা বেড়ে ১০ থেকে ২০ ট্রাকে দাঁড়িয়েছে। বন্দর দিয়ে ডায়মন্ড ও কাটিনাল এই দুই ধরনের আলু আমদানি হচ্ছে।
হিলির ব্যবসায়ীরা বলছেন, রেকর্ড আমদানির আগের দিনও বন্দরে প্রকারভেদে আলু বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা কেজিতে। তবে আমদানির খবরে কমতে থাকে দাম। শুক্রবার দাম কমে ৫১ থেকে ৫৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বন্দরে। তবে স্থানীয় বাজারে আমদানির প্রভাব পড়লেও ঢাকার বাজারে এখনও বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু।
রাজধানীর খুচরা বাজারের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ আগে যে আলুর দাম ছিল কেজি প্রতি ৬০ টাকার মধ্যে শুক্রবার বিভিন্ন বাজারে তা প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। পাইকারি বিক্রেতারা জানান, এখন পাইকারিতেই প্রতি কেজি আলু ৬২-৬৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক সপ্তাহ আগে ৫৮-৬০ টাকা ছিল।