• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ছাত্রনেতা পরিচয়ে ‘বিশ্বমঞ্চে’ ওঠা যুবকের নাম রাজিন, জানালেন পেছনের গল্প


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪, ১২:২১ পিএম
ছাত্রনেতা পরিচয়ে ‘বিশ্বমঞ্চে’ ওঠা যুবকের নাম রাজিন, জানালেন পেছনের গল্প
মঞ্চে উঠা যুবকের নাম জাহিন রোহান রাজিন। ছবি : সংগৃহীত

নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ (সিজিআই) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশে থাকা এক যুবককে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে তাকে সদ্য পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে দেখা গেছে। তাই অনেকেই তাকে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের সংশ্লিষ্ট হিসেবে দাবি করেছেন। এ ছাড়া এক ফেসবুক বার্তায় তাকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহফুজ আলম।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ওই যুবকের নাম জাহিন রোহান রাজিন। তিনি হাইড্রোকো প্লাসের প্রতিষ্ঠাতা।

মঞ্চে উঠার বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জাহিন। তিনি বলেন, “আমি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম সিজিআই ফেলো হিসেবে। ড. ইউনূস ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে যখন ডাকলেন, তখন আমি দর্শক সারিতে ছিলাম। পাশে ছিলেন দুই বিদেশি ভদ্রলোক। তারা আমাকে বললেন, তুমি বাংলাদেশি তরুণ, তুমিও যাও। তাই আমি কিছু না ভেবেই স্টেজে উঠে গিয়েছি।”

হাইড্রোকো প্লাসের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, “২০২১ সালের ইউনূস অ্যান্ড ইয়ুথ ফেলো আমি। আমার প্রতিষ্ঠান হাইড্রোকো প্লাসের কাজ এগিয়ে নিতে আমি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছিলাম। নিউইয়র্কে সিজিআইয়ের অনুষ্ঠানে তিনি আসবেন শুনে খুশি হয়েছিলাম এ কারণে যে, তার কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হবে।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সঙ্গে উঠানো ছবি প্রসঙ্গে জানতে জাহিন বলেন, “২০২২ সালে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে একটা কাজ করে হাইড্রোকো প্লাস। সে কাজের জন্যই মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে হয়েছিল। সে সময় ছবিটি তোলা। এটি কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এলো, তা জানি না।”

ছাত্র আন্দোলন বিষয়ে জাহিন বলেন, “আন্দোলনের সময় দেশেই ছিলাম। এ আন্দোলন সমর্থন না করার প্রশ্নই আসে না।”

এর আগে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের ডেকে নেন। তখন মঞ্চে ওঠেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ড. ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা তিথি ও আরেক যুবক। ওই যুবকই হলেন জিহান। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কেউ নন।

ওই মঞ্চে উঠা জিহানকে অনুপ্রবেশকারী বা ‘ইনট্রুডার’ বলে উল্লেখ করেছেন মাহফুজ আলম। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, “ওই ব্যক্তি অনুপ্রবেশকারী এবং অসৎ। তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় এ আয়োজনে যোগ দেন।”

মাহফুজ আলম বলেন, “স্যার যখন আমাদের মঞ্চে ডাকলেন, তিনি তড়িঘড়ি করে দাঁড়িয়ে আমাদের আগে মঞ্চের দিকে ছুটে গেলেন। আমি সেই লোকটিকে মঞ্চে যাওয়া থেকে প্রতিরোধ করতে পারিনি, যদিও আমি সন্দেহজনক ছিলাম। আবার বিশ্বনেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে সামনে আমি অসহায় বোধ করছিলাম। মনে হয়, এটা ছিল ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর অন্তর্ঘাতের একটি পূর্ব-পরিকল্পিত কাজ। আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ, সমন্বয়কারী ও যোদ্ধাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা তার অনুপ্রবেশরোধ করতে পারিনি।”

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, “আমরা আগামী দিনে গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকব এবং এই অনুপ্রবেশকারীদের এবং অন্যান্য জবাবদিহি করব।”

সূত্র : যুগান্তর ও ঢাকাপোস্ট।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!