বন্ধুর জন্মদিনের আনন্দ ভাগাভাগির সব প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তারা। গাজীপুরের টঙ্গী কলেজ গেট এলাকার বাসিন্দা রাব্বী (২৫) ও কারিমা আক্তার মীম (২০) দম্পতি। বন্ধু মুনতাসীর মাহমুদের জন্মদিন উপলক্ষে বন্ধু তার বাসায় গিয়েছিলেন তারা। কথা ছিল মুনতাসীর রেস্তোরাঁয় খাবার খাওয়াবেন তারা। কিন্তু রেস্তোরাঁয় পৌঁছানোর আগেই প্রাণ যায় রাব্বী-মীম দম্পতির।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উত্তরা বিএনএস সেন্টারের বিপরীত পাশের রাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে মীম ও মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল পৌনে ৭টার দিকে রাব্বি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মুনতাসীরের স্ত্রী তানজিলা জানান, রোববার স্বামী মুনতাসির মাহমুদের জন্মদিন ছিল। এ উপলক্ষে কলেজ গেটে তানজিলাদের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন রাব্বি-মীম দম্পতি। সেখানে জন্মদিন পালন করার পর তানজিলার স্বামী মুনতাসিরের কাছে রাতে বাইরে খাবার খাওয়ার আবদার করেন রাব্বি। সেই আবদারে তারা দুই দম্পতি পৃথক দুটি মোটরসাইকেলে টঙ্গী থেকে ঢাকায় ঢুকছিলেন।
তানজিলা আরও জানান, রাব্বির মোটরসাইকেলটি পেছনে ছিল। উত্তরা থেকে কিছু দূর এগোনোর পর রাব্বির অবস্থান জানতে তিনি কল করলে এক পুলিশ কর্মকর্তা ফোন রিসিভ করেন। জানান উত্তরা বিএনএস সেন্টারের বিপরীত পাশে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তারা পড়ে আছেন। পরে তারা সেখানে গিয়ে দুজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে রাত পৌনে ৩টার দিকে চিকিৎসক মিমকে মৃত ঘোষণা করেন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৭টার রাব্বি দিকে মারা যান।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, রাব্বি ও মীম চার-পাঁচ বছর আগে বিয়ে করেছেন। তাদের কোনো সন্তান নেই। দুজনই বেকার ছিলেন।
এ বিষয়ে উত্তরা (পূর্ব) থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন দেওয়ান জানান, ‘রাত আড়াইটার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তায় তাদের দুজনকেই পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাশেই তাদের মোটরসাইকেলটি পড়েছিল। তবে কীভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। স্থানীয়রাও কেউই দুর্ঘটনা ঘটতে দেখেনি। রাতেই তাদের দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। মরদেহ দুটি ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।’