রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগসহ ৪ দফা দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীসহ শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর এপিসি ও জলকামান।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তারা ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচির উদ্দেশ্যে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নেন।
বিক্ষোভকারীদের ৪টি দাবি হলো, অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে হবে; সংবিধান বাতিল করতে হবে; বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন করাসহ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি (স্মারক), জিয়া সাইবার ফোর্সসহ আরও কয়েকটি সংগঠন এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ব্যানারেও অবস্থান নিয়েছেন অনেকে।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল শুরু করে বঙ্গভবনের দিকে যাত্রা শুরু করে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি। হাইকোর্ট মাজার মোড় এলাকায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। কিন্তু বাধা অতিক্রম করে বঙ্গভবন পর্যন্ত এগিয়ে যায় তারা। সেখানে তারা বঙ্গভবনের সামনের খালি জায়গায় অবস্থান করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। উপায় না পেয়ে বঙ্গভবন মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে তারা।
এ বিষয়ে মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শাহরিয়ার আলী বলেন, “আমরা সতর্ক রয়েছি। দুই-তিনটা ব্যানার নিয়ে কিছু মানুষ বিক্ষোভ করছেন। তাদের বাধা দেওয়া হয়নি। তবে আমরা সতর্ক রয়েছি।”
এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে শহীদ মিনারে শুরু হয়েছে গণজমায়েত। গণজমায়েতের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুকে এক পোস্ট থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সবাইকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
পোস্টে ছাত্রলীগকে তিনি ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বর্ণনা করে নিষিদ্ধের দাবি জানান। এ ছাড়া নিজের পোস্টে রাষ্ট্রপতিকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বিকেলে শহীদ মিনারে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। ফেসবুকে সবাইকে শহীদ মিনারে আসার আহ্বান জানিয়ে সারজিস আলম লিখেছেন, “সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ, ফ্যাসিস্টের দোসর চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিতে শহীদ মিনারে গণজমায়েতে বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”
সম্প্রতি মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তার কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। এ নিয়ে সোমবার (২১ অক্টোবর) দিনভর নানা বিতর্ক ও সমালোচনা চলে দেশজুড়ে। এরপর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে রাষ্ট্রপতির পদে তার থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।