মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “অন্য ভাষা শিখতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগই প্রথম ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস পালনের ঘোষণা দেয়। ভাষার জন্য যারা রক্ত দিয়েছেন তাদের আত্মদান বৃথা যায়নি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনী না প্রকাশ হলে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছেই ফেলা হতো।”
তিনি বলেন, “ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে অবদান আছে সেটি স্পষ্ট। যদি এই তথ্যগুলো আমরা বের না করতাম আর জাতির পিতার লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ যদি বের না হতো তাহলে ভাষা আন্দোলন থেকে তাকে তো মুছেই ফেলা হয়েছিল। নামটাই মুছে ফেলা, এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য। যখনই যে কাজ করেছেন তখনই ইতিহাস থেকে তার নামটা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ভাষা আন্দোলনের অনেক তথ্য আপনারা পাবেন, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা যেসব রিপোর্ট দিয়েছিল সেখানে। আমি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে সমস্ত রিপোর্ট সংগ্রহ করি। সেগুলো কপি করে আমাদের কাছে রাখি। আমাকে সহযোগিতা করে আমার বান্ধবী বেবী মওদুদ। প্রায় ২০ বছর আমরা এর ওপরে কাজ করি, প্রত্যেকটা ফাইল আমরা দেখি। দ্বিতীয় বার যখন আমি ক্ষমতায় আসি, তখন সিদ্ধান্ত নেই এগুলো প্রকাশ করব। পৃথিবীতে কোনো নেতার ওপর কোনো রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। আমাদের এই রিপোর্টটাই সর্বপ্রথম আমি প্রকাশ করলাম।”
তিনি আরও বলেন, “আমি অনেক নেতার ফাইল এনেছি, দেখেছি। কারও হয়তো একটা ফাইলের বেশি কিছু নেই। আর এখানে ৪৮টি ফাইল, ৪৬ হাজার পৃষ্ঠা। আমি যখন এটার এডিট করি, অনেক কিছু বাদ দিয়ে মূল যে তথ্যগুলো সেখানে নিয়ে এসেছি। তাতেও ১৪ খণ্ড হচ্ছে। ১১ খণ্ড ইতোমধ্যে ছাপা হয়ে গেছে। ১২ নম্বরটাও ছাপতে দেওয়া হয়েছে। ১৩ নম্বরটা এডিট করে দিয়ে দিয়েছি, আর ১৪ নম্বরটা করব। ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর যে অবদান সেই কথাটা কিন্তু স্পষ্ট এখানে আছে। যদি এই তথ্যগুলো আমরা বের না করতাম, আর জাতির পিতার লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী যদি বের না হতো তাহলে তাকে তো ভাষা আন্দোলন থেকে মুছেই ফেলা হয়েছিল।”
আলোচনা সভার শুরুতে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদ হুমায়ুন কবির।
আলোচনা সভাটি পরিচালনা করছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ।