রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারে আজোয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০০ টাকায়। একই দামে আজোয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে কারওয়ান বাজারেও। অথচ, একমাস আগে বাজারে এই খেজুরটির প্রতি কেজির দাম ছিল ১০০০ টাকা। পাশাপাশি মরিয়ম, মেগজুল, শুকতারি, তিউনেশিয়া, বড়ই, মাবরুম খেজুরের দামেও এসেছে পরিবর্তন।
একই অবস্থা ছোলা বুটের দামেও। গত ১৫ দিনে ছোলা বুটের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা।
পবিত্র রমজান মাস আসার আগেই হঠাৎ এই দুটি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ক্রেতাদের কপালে। যদিও বিক্রেতারা বলছেন, ডলার সংকট ও আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতাদের অভিযোগ, সবকিছুই ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারসাজি।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীতে মরিয়ম জাতের খেজুর বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৯০০ টাকায়। এ ছাড়াও প্রতি কেজি মেগজুল ১৬০০, শুকতারি ৯০০, তিউনেশিয়ান ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি মানভেদে বড়ই ৩০০ থেকে ৫০০, মাবরুম ১১০০ থেকে ১৫০০, সাফাভি ৯০০ থেকে ১০০০, দাবাস ৫০০ থেকে ৫১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এর আগে প্রতি কেজি মরিয়ম খেজুরের দাম ছিল ৮০০ টাকা। এছাড়াও মেগজুল ১৫০০, শুকতারি ৭০০, তিউনেশিয়া ৫৫০, বড়ই ২০০ থেকে ৪০০, মাবরুম ৭০০ থেকে ৮০০, সাফাভি ৭০০ থেকে ৮০০ এবং দাবাস বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ২৮০ টাকা কেজি।
এদিকে, রাজধানীর বাজারে এখন ছোলা বুট বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ১১০ টাকায়। ১৫ দিন আগে এই ছোলা বুটের দাম ছিল প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৯০ টাকা।
মহসিন নামের একজন ক্রেতা বলেন, “ছোলা বুটের দাম বাড়ছে। রমজানের আগেই দাম বেড়ে যাওয়া সুখবর নয়। কেন বাড়ছে, তা খুচরা বিক্রেতারা জানবে না এটাই স্বাভাবিক। বড় বড় যারা ব্যবসায়ী তারাই সিন্ডিকেটটা করছে।”
মোহাম্মদ আলী নামের একজন খেজুর ক্রেতা বলেন, “খেজুরের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে। খেজুর মানুষ শখ করেই কেনে। কিন্তু শখের জিনিসের দাম এত বাড়ছে। যে কেনার ইচ্ছাই মরে গেছে। রমজানের সময় যদি আরও বাড়ে তবে খেজুর মুখে উঠবে না।”
খেজুর ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত রমজান মাসে খেজুরের দাম বর্তমান বাজারের চেয়ে কম ছিল। এবার রমজান আসার আগেই দাম বেড়ে গেছে। ডলার সংকট আর আমদানি খরচ বেশি হওয়ায় বাজারে খেজুরের দাম বেশি। এটা বড় বড় ব্যবসায়ীরা বলে। আমরা খুচরা বিক্রি করি। লোকসান করে তো বিক্রি করতে পারব না। বেশি দামে আনলে বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। তা ছাড়া উপায় নাই।”
মনির হোসেন নামের আরেক খেজুর ব্যবসায়ী বলেন, “খেজুরের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা খুবই কম। যার যেটা খুব প্রয়োজন সেটাই নেয়। খেজুর হচ্ছে শখের ফল। তাই খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া খেজুর মানুষ কিনছেন না। দাম বেড়ে যাওয়ার সঠিক কারণ আমার জানা নেই। তবে ভ্যাট আর ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে গেছে, তাই দাম বাড়ছে এতটুকুই শুনি। আমরা দুইটাকা লাভের ব্যবসায়ী। দুইটাকা লাভ করে বিক্রি করে দেই।”
মুদি ব্যবসায়ী জাবির বলেন, “আগের চেয়ে ছোলা বুটের দাম ১০ টাকা বাড়ছে। সামনে রমজান মাস আসতেছে। এ কারণে দামটা বাড়তে পারে। দাম কমে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখতেছি না। বর্তমানে ছোলা বুটের ক্রেতা কম।”
আব্দুল্লাহ নামের আরেক মুদি ব্যবসায়ী বলেন, “১৫ দিন বা ১ মাস আগে ছোলা বুটের দাম সর্বনিম্ন ৮৫ টাকা ছিল। এখন সাদা ছোলা, যেটার মান অনেক ভালো সেটার দাম ১১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির কারণ আমরা জানি না। তবে যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তারা যদি তদারকি করে তবে দাম কমতেও পারে।”