• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

ঈদের আগে বাজারে উত্তাপ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৪, ১১:১৭ এএম
ঈদের আগে বাজারে উত্তাপ

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। ইতিমধ্যে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন মানুষ। তবে বিভিন্ন বাজারে চড়া দরে বিক্রি হচ্ছে শাক-সবজি, ডিম, মাছ-মাংসসহ প্রায় সব পণ্য। ক্রেতাদের দাবি, নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রমজানের ঈদ পেরিয়ে কোরবানির ঈদ সমাগত। কিন্তু বাজার পরিস্থিতি বদলায়নি বিন্দুমাত্র।

শুক্রবার (১৪ জুন) কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ, জিনজিরা, আগানগর এবং রাজধানীর রায়সাহেব বাজার, নয়াবাজার ও শ্যামবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজারে বাজার করতে আসা সুভাস জানান, রোজার ঈদের মতো কোরবানির ঈদের আগে চড়া নিত্যপণ্যের বাজার। মন্ত্রীরা বড় বড় কথা বললেও বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ তারা।

আরেক ক্রেতা কনক জানান, বাজার সম্পূর্ণ নাগালের বাইরে চলে গেছে। কোনো পণ্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই। ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে সরকারকে কাজ করতে হবে।

এদিকে, বাজারের অধিকাংশ সবজিই এখন ক্রেতার নাগালের বাইরে। বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত।

বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৮০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৪০-৫০ টাকা, কহি ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, লতি ৬০-৮০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও কাঁকরোল ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, প্রতি পিস লাউ ৫০ টাকা ও চালকুমড়া ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আঁটি লালশাক ১৫ টাকা, পাটশাক ১০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, কলমিশাক ১৫ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়।

তবে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। আর পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা।

রাজধানীর শ্যামবাজারের সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ট্রাক-পিকআপগুলো পশু পরিবহনে ব্যস্ত। ফলে মরিচসহ অন্যান্য সবজি কম আসছে। পাশাপাশি বেড়েছে ট্রাক ভাড়াও। এতে সরবরাহ কমায় দাম চড়েছে।

স্বস্তির খবর নেই ডিম ও মাংসের বাজারেও। কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৭০০-৭৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। তবে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে সোনালি মুরগির দাম। কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। এছাড়া, জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।

বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের কারণে গাড়ি কম আসায় পাইকারিতে বেড়েছে দাম। যার প্রভাব পড়েছে খুচরায়ও।

বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।

দাম বেড়েছে ডিমেরও। মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, আর সাদা ডিম ১৫০ টাকায়, আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২০০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়।

এদিকে, স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। প্রায় সব ধরনের মাছে কেজিতে দাম বেড়েছে ২০-৫০ টাকার মতো। বিক্রেতাদের অজুহাত, ঈদের কারণে মাছ কম আসায় বাড়ছে দাম।

বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২৩০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০-২৪০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৬৫০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়। এছাড়া আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা ও আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, কেজিতে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ইলিশের দাম। এ মুহূর্তে প্রতি কেজি ইলিশের দাম পড়ছে ১ হাজার ৮০০ টাকা। যদিও ৮০০-৯০০ গ্রাম ইলিশ ১৬০০ টাকা ও ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০-১৪০০ টাকায়।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।

আর বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে। 

Link copied!