• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সংবাদ প্রকাশ ও আমরা যেমন


ওমর ফারুক শামীম
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৩, ০৫:৫৩ পিএম
সংবাদ প্রকাশ ও আমরা যেমন

সকাল-দুপুর থেকে সন্ধ্যা-রাত, এক স্নিগ্ধ আলো শান্তির পরশে সময়কে এফোঁড়-ওফোঁড় করে গড়িয়ে নেয় আমাদের। এ যেন প্রতিদিনের স্বস্তির ক্রিয়া সম্পাদন। নিত্যকার স্বস্তির এমন সরল তিরিশ আসলে কারোরই গায়ে বা মনে বাধে না। চলছি আমরা প্রতিদিনকে মাসে মাখিয়ে, মাসকে বছরে মাখিয়ে, আর বছরকে স্বপ্নে মাখিয়ে। এ এক শুদ্ধস্বপ্ন। সময়কে অতিক্রম করার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছে যে স্বপ্নটি, সেটির নাম ‘সংবাদ প্রকাশ’। 

দেশের জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ সময়কে অতিক্রম করার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে গুটিগুটি পায়ে। একঝাঁক কর্মনিষ্ঠ সংবাদকর্মী এখানে শুদ্ধ সাংবাদিকতার চর্চা করেন। দেশাত্মবোধ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়ে সংবাদ তৈরি ও পরিবেশন করেন পাঠকের কাছে।

বিপুল বিনিয়োগের মারমার কাটকাট সংবাদ না থাকলেও সংবাদ প্রকাশের সাধ্যের সংবাদগুলো সাবলীল রুচিশীল আর রীতিশুদ্ধ। কথা বলার প্রমাণ রেখেছি আমাদের পোর্টালে। মাত্র ৭৩০ দিনের এ যাত্রায় সংবাদ প্রকাশের পোর্টাল শুদ্ধ সম্ভারে ভরপুর। মেদহীন, পরিচ্ছন্ন, সময়চিত্রের বস্তুনিষ্ঠ তথ্যগুলো আমরা পোর্টালে আরও পুঞ্জীভূত করতে চাই পাঠকদের জন্য। 

সংবাদ প্রকাশের এ স্বপ্নযাত্রায় আমাদের আছে অনেকগুলো মনের মরমি বাঁধন। উদ্যোগ, উদ্যম, বাস্তবায়ন আর দায়িত্বশীলতার সমান্তরাল গতি আমাদের এগিয়ে নিচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। আমরা সবাই স্ববৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল আর ভিন্ন মাত্রার।

যেমন আমাদের অফিস সহায়ক জাকারিয়া। অমায়িক আর বিনয়ী আচরণে সবাইকে মুগ্ধ করে রাখে। কখন কার কী প্রয়োজন, তা নিজস্ব বুদ্ধিমত্তায় উপলব্ধি করে এবং নিয়ে এসে সামনে হাজির হন।

সোশ্যাল মার্কেটিংয়ের তরিকুল ইসলাম নিউজ আর ভিডিও কন্টেন্ট পোর্টালে উঠতেই শেয়ার করেন পাঠকের সঙ্গে। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে নিভৃতে ব্যস্ত থাকেন মোস্তাকিম হাসান। নিবিড় মনোযোগে কাজ করে যান গ্রাফিকসের সাব্বির আহম্মেদ তনু। চলতে-ফিরতেও যার শব্দ শোনা যায় না। তবে প্রয়োজনে কথা বলেন সহাস্য বদনে।

কানে হেডসেট লাগিয়ে প্যানেলে বসে ভিডিও এডিটিংয়ে ব্যস্ত থাকেন জাহিদ আহমেদ ও তার টিমের মির সাব্বির আর সাফিয়া নুর তাজরিন। সংবাদ ও প্রোগ্রাম প্রডিউসারের সঙ্গে টুকটাক শব্দ বিনিময় হয় তাদের। তবে কদিন ধরে ওখান থেকে মিছিল-মিটিংয়ের শব্দ আসে। মাঝেমধ্যে ওবায়দুল কাদের, মির্জা ফখরুল, ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যও শোনা যায়। দুদিন পরপর হিরো আলমকেও শুনি এডিটিং প্যানেলে বগুড়ার ভাষা মিশিয়ে বাংলা বলার চেষ্টা করছেন। 

চিবিয়ে চিবিয়ে ধীরলয়ে কথা বলা কনটেন্ট ক্রিয়েটর মনজুর হাসান শাওন, সে এক অন্য রকম। কনটেন্ট রেডি করে প্রণবদাকে, আবার কখনো আমাকে বলে ভাই দেখে দেন। বিনয় আর মাঝেমধ্যে তার দারুণ সব উক্তি আমাদের নীরবতা ভেঙে হাসির জোয়ার তোলে।

বার্তা বিভাগের বানান বিশেষজ্ঞ সজ্জন, বিনয়ী আর নম্র কোমল মনের এক প্রিয় ভাই আছেন, তার কথা বলা বারণ। থাক এ দফায় না-ই বললাম।

এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার রাশেদ হাসান ভাইকে মাঝেমধ্যে বলতে শুনি এটা না ওটা, এভাবে না ওভাবে। নিতান্ত সাদামাটা এক ভদ্রলোক রাশেদ ভাই। কাজ করেন নীরবে।

ক্যামেরা পারসন লিটন রোজারিও এবং রিয়াদুর রহমান পিনজুর দৌড়ঝাঁপের অন্ত নেই। কখনো এফডিসিতে কখনো রাজপথে। কখনো তারকাদের শুট করতে ব্যস্ত থাকেন। কখনোসখনো ক্লান্তি নিয়ে এসে এলিয়ে পড়েন স্টুডিওতে। তবে প্রোডাকশনে এ দুজন বিকল্পহীন। 

প্রশাসন আর হিসাব বিভাগে নিরবচ্ছিন্ন ব্যস্ততা। পুরো অফিসের যাবতীয় ব্যবস্থাপনার কাজ গুছিয়ে রাখার দায়িত্ব যার, তার নাম সানজিদা শম্পা। এত চাপের মাঝেও ভিডিও ক্লিপে ভয়েস দেন তিনি। স্ক্রিপ্টের শব্দ ও বাক্যে কণ্ঠের ওঠানামায় দারুণ কম্বিনেশন। দাড়ি, কমা আর যতিতেও বেশ সাবলীল। 

সেন্ট্রাল ডেস্ক, এটা তো স্পর্শকাতর জোন। এখানে পিনপতন নীরবতায় সংবাদের খুঁটিনাটি সংযোজন-বিয়োজন হয়ে পাঠযোগ্য করে পাঠকের জন্য পরিবেশন করা হয়। সহসম্পাদকদের নিবিড় মনোযোগে একটি খসখসে সংবাদ হয়ে ওঠে সুখপাঠ্য। এই ডেস্কের তত্ত্ববধানে কান্ট্রি, ন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনালসহ সব বিভাগের সংবাদ তৈরি হয়। খেলা, ফিচার, স্বাস্থ্য, জীবনযাপন, ইচ্ছে হলো, মতামতসহ আরও আছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। 

সিনিয়র সহসম্পাদক অনুজ নূর মামুন নিরলস সাপোর্ট দিয়ে যান সংবাদ আয়োজনে সবাইকে। স্বভাব-সুলভে ধর্মীয় আচারের বিনয়াবনত ভাব মুগ্ধ করে আমাদের। 

এ ছাড়া সহসম্পাদক রাসেল হোসাইন, শুভ আনোয়ার, পাপিয়া মামুন, মেজবাহ রহমান, রুমি প্রভা, কাজী পাপ্পু, জিহাদ আল হাসান নিজ নিজ দায়িত্বে দুর্দান্ত, এরা দারুণ সমন্বয় করেন সবার সঙ্গে। সপ্তাহের টপ সেভেন সংবাদ প্রকাশের একটি অনন্য আয়োজন। সপ্তাহের বিশেষ বিশেষ সংবাদগুলো নিয়ে কান্ট্রির সহসম্পাদক পাপিয়া দারুণ প্রেজেন্ট করেন প্রোগ্রামটি।

এবার আসি তাদের কথায়, যাদের কথা না বললে পানসে হয়ে যাবে সবই। তারা আমাদের বিভিন্ন বিটের বাইরেও মোজো সাংবাদিকতা করেন। এরাই সংবাদ আয়োজনের প্রাণভোমরা। মাঠে-ময়দানে ঝুঁকি নিয়ে দারুণ সব অ্যাসাইনমেন্ট কাভার করেন জাহিদ রাকিব, বিজন কুমার দাস, খাদিজা নিপা, সামিয়া বিন্দুসহ রিপোর্টিং টিমের অন্য সহকর্মীরাও।

গোড়ার দিকের অংশ তো বলতেই হবে। তা হলো সেন্ট্রাল ডেস্ক। এখানে সবার কাজের সমন্বয়, সুবিধা-অসুবিধা থেকে শুরু করে ভেতর-বাইরের আদ্যোপান্ত বয়ে বেড়ান প্রিয় প্রণব আচার্য্য। নিরেট এই ভদ্রলোকের বিশেষ অভিধাগুলো আগামী দিনের জন্য মনের কোণে জমা রেখে দিলাম। সুশৃঙ্খল আর পরিচ্ছন্ন মনোযোগে কাজ আদায়ে পারদর্শী আমার এই প্রিয় সহকর্মী। 

‘আমার’ শব্দটি চলেই এলো যখন তাহলে বলে ফেলি কিছু কথা। ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই, সংবাদ প্রকাশে আমার ৩১ দিন। মনে হচ্ছে দীর্ঘ, সমান্তরাল, মসৃণ এক স্বপ্নযাত্রায় আমি অনেক পুরোনো সারথি। সবার ভালোবাসায় মুগ্ধ আমি এখনো বিভোর আছি।

এবার যাঁকে নিয়ে বলছি, তিনি আমাদের স্বপ্নডিঙ্গার মাঝি। জ্ঞানে-গুণে ফলবান অনন্য এক মানবিক মানুষ। যাঁর হাত ধরে স্বল্প আয়োজনেও পরিচ্ছন্ন আর শুদ্ধ সাংবাদিকতার ক্ষেত্র হয়ে উঠছে সংবাদ প্রকাশ। যাঁকে আমরা প্রচারবিমুখ, শান্তশিষ্ট আর সর্বদা কল্যাণচিন্তার প্রাণপ্রেমী মানবিক মানুষ মনে করি। তিনি সংবাদ প্রকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের দাদা, বিধান রিবেরু। আমরা আপনার সুস্বাস্থ্য আর দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

সবশেষে যাঁর কথা বলছি, তিনি দেশের অনন্য এক গুণীজন। আমাদের সম্পাদক, দেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শ্রদ্ধেয় সেলিনা হোসেন। যাঁর আলোয় আলোকিত সংবাদ প্রকাশ। তিনি বেশ কিছুদিন থেকে বার্ধক্যজনিত কিছু রোগে ভুগছেন। আমরা তাঁর আরোগ্য কামনা করছি। 

পরিশেষে সংবাদ প্রকাশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সব সহকর্মীর প্রতি অন্তস্তল থেকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর বিনয়ী শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। এগিয়ে যাক প্রিয় কর্মস্থল সংবাদ প্রকাশ।

লেখক : বার্তা সম্পাদক, সংবাদ প্রকাশ।

Link copied!