জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)। নামাজ পড়ে দোয়াও করেছেন ছাত্রদের জন্য।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলন এমন দাবি করেছেন জি এম কাদের। এসময় উপস্থিতি ছিলেন জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল করিম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও স্ত্রী শেরিফা কাদের প্রমুখ।
জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, “ব্ল্যাকমেইল করে আমাদের নির্বাচনে আনা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের আমলে আমরা যেসব নির্বাচনে অংশ নেই, সেগুলো স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না। শেখ হাসিনা গায়ের জোরে আমাদের নির্বাচনে এনেছিল।” জিএম কাদের দাবি করেন, “আমরা সুশাসন দিয়েছিলাম। দখলদারিত্ব করিনি। উন্নয়ন, সংস্কার করেছি। এর ফলে এরশাদ বডিগার্ড নিয়ে চলতেন না।”
জুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত আন্দোলন নিয়ে জি এম কাদের তার অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। নামাজ পড়ে দোয়া করেছি ছাত্রদের জন্য। কিন্তু বিএনপি আন্দোলন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র করেছে।”
সঠিক বিচার না পাওয়ার হতাশা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে জিএম কাদের বলেন, “আমরা সঠিক বিচার পাচ্ছি না। বারংবার কবর দেওয়ার পরও আমরা উঠে এসেছি। জনগণের মনে আমাদের যে স্থান আছে, তা কেউ নষ্ট করতে পারবে না। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও প্রটেকশন আমরা পাই না। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের অপরাধী করা হচ্ছে। দেশের জনগণের সঙ্গে আমরা থাকবো। জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাবে।”
একটি পক্ষের দিকে ইঙ্গিত করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, “যারা এখনো পানিতেই নামেনি, তারা এখন আমাদের বিরুদ্ধে নানা কথা বলছে। তাদের ধারণা, জাতীয় পার্টির ধ্বংস হলে তাদের ভোটগুলো আমরা পাব। পলিটিক্সে তাদের ম্যাচুরিটি আসেনি, যারা এ কথা বলে।”
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতা’ ব্যানারে একদল লোক মিছিল নিয়ে পার্টির কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যায়। এ সময় সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে আগুন দেওয়া হয়। তবে দুই পক্ষই দাবি করেছে, তাদের ওপর আগে হামলা হয়েছে।
তার আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে একটি পোস্টে বলেন, ‘জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত।’ এর কিছুক্ষণ পর হাসনাত আবদুল্লাহ আরেকটি পোস্টে লেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে রাত সাড়ে আটটায় মিছিল নিয়ে তারা বিজয়নগরে যাবেন। ‘জাতীয় বেইমানদের’ নিশ্চিহ্ন করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সারজিস আলম একই সময়ে একটি পোস্টে লেখেন, ‘রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে আমরা বিজয়নগরে যাচ্ছি।’