দেশের বাজারে আলুর দাম নিয়ে অস্থিরতা চলছে। দুই মাস আগে যে আলুর দাম ছিল কেজি ২৫ টাকা, বর্তমানে সেই আলুর কেজি ৪৫ টাকা। নিম্নবিত্তের অতিপ্রয়োজনীয় এই খাদ্য অনুসঙ্গটির লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ায় বিপাকে ক্রেতারা। দুই সপ্তাহ আগে আলুর কেজি ছিল ৪০, এখন ৪৫ টাকা। আলুর এই ধারাবাহিক দামবৃদ্ধি যেন অস্থির বাজারে মূল্যবৃদ্ধির আরেক প্রতিযোগিতা।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে দুই ধরনের আলুর সরবরাহ রয়েছে। একটি লাল এবং অপরটি সাদা। এরমধ্যে লাল আলুর চাহিদা বেশি থাকলেও দামে তেমন পার্থক্য নেই। খুচরা বাজারে এসব আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫ টাকায়।
অপরদিকে, পাইকারি বাজারে এসব আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৩ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু দুই সপ্তাহ আগেও পাইকারি দাম ছিল ৩৭ থেকে ৪০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে আলুর দাম। আগামী দিনগুলোতে বাজারে আরও বাড়তে পারে আলুর দাম।
রোমান নামের তেঁজগাও এলাকার এক আলু ক্রেতা বলেন, “অন্যান্য কাঁচা সবজির থেকে আলু সবথেকে বেশি জনপ্রিয়। বাজারে সব জিনিসের দাম বাড়ছে। এবার আলুর দাম বেড়েছে। এতে আমার মতো মানুষের জন্য অনেক কষ্টকর। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ১০ কেজির জায়গায় এখন ৫ কেজি নিতে হচ্ছে। আলুর দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা থাকলে সকলের সুবিধা হবে।”
মগবাজার থেকে আসা রণি বলেন, “বাজারে প্রতিটা জিনিসের দাম বাড়ছে। কিন্তু বেতন সে হারে বাড়ছে না। মানুষ যেকোনো খরচ করতে হিমশিম খাচ্ছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের যেসব প্রদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তাতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে আমার মনে হয়। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে দাম কমানো উচিৎ। আমি স্বল্প আয়ের মানুষ। ঢাকা শহরে খাওয়ার খরচ জোগাতে গিয়ে বাড়ি ভাড়া দিতে সমস্যায় পড়ি।”
পাইকারি বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন বলেন, “বাজারে এখন সবই পুরাতন আলু। নতুন আলু আসবে আগামী বছর। আলুর সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়তি। আগামীদিনে আলুর দাম আরও বাড়বে। আর দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি আর লাভ দুইটাই কমেছে। ২০০ বস্তার জায়গায় বিক্রি হয় ১০০ বস্তা। সেটাও অনেক কষ্ট করে বিক্রি করতে হয়। ক্রেতা আসে অনেক দরদাম করে। কিছু করার নেই। পরিস্থিতির শিকার সকলেই।”
খুচরা বিক্রেতা মকবুল হোসেন বলেন, “গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে আলু বিক্রি করছি ২৫ টাকা ৩০ টাকা। এক বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা। গত বছরের কথা শুধু নয়। ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও বাজারে আলু বিক্রি করছি ৪০ টাকা কেজি। দিন দিন দাম বাড়ছে আর লাভের পরিমাণ কমছে। সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ছে।”