শেখ হাসিনার পতনের পর প্রাণ রক্ষার্থে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিচারক, পুলিশ সদস্যসহ ৬২৬ জন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে প্রাণরক্ষায় রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ মোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ৬১৫ জন নিজ উদ্যোগে সেনানিবাস ছেড়ে যান। অভিযোগ বা মামলার ভিত্তিতে চারজনকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে সাতজন সেনানিবাসে অবস্থান করছেন।
রোববার (১৮ আগস্ট) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সবচেয়ে বেশি আশ্রয় নিয়েছিলেন পুলিশ সদস্যরা। এ সংখ্যা ৫১৫। তবে কারা আশ্রয় নিয়েছিলেন সেটি জানা যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, বিভিন্ন সেনানিবাসে যাদের আশ্রয় দেওয়া হয়, তাদের মধ্যে ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তি। ৫ জন বিচারক। ১৯ জন বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা। ২৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা। ৪৮৭ জন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য। বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ব্যক্তি ১২ জন। ৫১ জন পরিবার-পরিজন (স্ত্রী ও শিশু)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে ৬১৫ জন নিজ উদ্যোগে সেনানিবাস ত্যাগ করেন। আশ্রয় দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে এখন পর্যন্ত ৪ জনকে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বা মামলার ভিত্তিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আশ্রয়প্রাপ্ত তিনজন তাদের পরিবারের চার সদস্যসহ মোট সাতজন বর্তমানে সেনানিবাসে অবস্থান করছেন। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সব তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নের পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড রোধ ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে নিরপেক্ষ, পেশাদারির সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ ক্ষেত্রে গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে ধৈর্যশীল ও সহযোগী মনোভাব প্রদর্শনের জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা জনসাধারণের পাশে আছে, থাকবে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও পুলিশ থানাতে ফিরতে শুরু করলেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দাপটে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে রয়েছেন—সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি (এসবি প্রধান) মনিরুল ইসলাম, ডিআইজি হারুন অর রশিদ, ডিসি বিপ্লব কুমার, মেহেদি হাসান, সুদীপ, এডিসি ইলিয়াস, রমনার এডিসি আখতার, এসি ইমরান। তাঁরা দেশে রয়েছেন নাকি দেশের বাইরে তাও নিশ্চিত করা যায়নি।