পুলিশকে যারা দানব বানিয়েছে, তাদের বিচার হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, “পুলিশ খুবই অনুতপ্ত। আমি এখানে (পিলখানা) আসার সময়ও দেখলাম পুলিশের সঙ্গে ছাত্ররা কাজ করছে।”
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১২টায় পিলখানার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিজিবি সদস্যদের খোঁজ-খবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব বলেন।
চিকিৎসাধীন বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশে এম সাখাওয়াত হোসেন, “একটু সবুর করেন। সরকারি অ্যাকশন নিতে গেলে অনেকগুলো প্রসেস আছে, যেগুলো টপটপ করা যায় না। সুতরাং ধৈর্য ধরতে হবে।”
নিজের দেওয়া এক বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “কথার মধ্যে অনেক কথা চলে আসে। যদি আমি এমন কোনো কথা বলে থাকি, সেটা ভুল বুঝেছেন, সেটার জন্য আমি দুঃখিত।”
১৫ আগস্ট ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা এখনই আমি বলতে পারব না। আজ বিকেলে আমরা বসব, সেখানে এটা নিয়ে আলোচনা হবে। যাই হয়, আমরা নির্ধারণ করব। সেদিন প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। কেউ যাতে কোনো ধরনের গন্ডগোল করতে না পারে।”
পুলিশের যোগদান সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “সবাই যোগ দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বলতে পারব, কয়জন আসছে, কয়জন আসেনি। আর আপনারা তো দেখছেন পুলিশ আমার সঙ্গে আছে।”
ছাত্রদের উদ্দেশে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আমি ছাত্রদের উদ্দেশে বলব, তোমাদের আন্দোলন কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। এই আন্দোলনের তো ইমেজ আছে। আর পুলিশ তো অনুতপ্ত। আমি তোমাদের কয়েকজনকে দাওয়াত করি, আমরা একসঙ্গে বসে পুলিশের সঙ্গে দুপুরে খাও।”
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “সব কিছুর একটা প্রসেস আছে। আমি লিস্ট করছি। যাদের অন্যায়ভাবে বের করা হয়েছে, আবার যারা এরমধ্যেই ছিল না। আপনারা যাদের কথা বলছেন, সেটা আমরা দেখব। তবে আমরা খুঁজছি, হুকুমের আসামিদের বের করার চেষ্টা করছি।”
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “যাদের কথা বলা হচ্ছে, তাদের সবার লিস্ট আমাদের কাছে আছে। ২/১ দিনের মধ্যে আপনারা অ্যাকশন দেখবেন। আমি তো এটার মালিক না। চাইলেই সাইন করতে পারি না। দুটো ধাপ পার হতে হবে। আজ বা কালকের মধ্যে আপনারা খবর জেনে যাবেন। মাঠের কাজ প্রায় শেষ।”
অস্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “যারা অস্ত্র ছিনতাই বা লুট করেছে, তাদের ফেরত দিতে বলেছি। যদি জমা না দিয়ে ধরা পড়েন তাহলে, দুই রকমের শাস্তি পাবে। নিষিদ্ধ অস্ত্র ছিনতাই ও নিষিদ্ধ অস্ত্র পাওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন। সুতরাং নিজেরা ভয়ে আসতে না পারলে, অন্য কাউকে দিয়ে জমা দেন।”
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “পুলিশ আমাকে বলেছে, এই ইউনিফর্ম পরে একদিনও বের হতে চাই না। আমি বলেছি, এটার জন্য তো সময় লাগবে। যারা ছাত্র, কোটার আন্দোলনের মধ্যে ছিলেন তাদের বলছি, আপনারা ডিজাইন, ব্যাচ নিয়ে আসেন। আমরা যত দ্রুত সম্ভব ইউনিফর্ম চেঞ্জ করতে চাই। পুলিশরা ভবিষ্যতে যেন মানবিক পুলিশ হয় সেজন্য আমরা পুলিশ কমিশন গঠনের চিন্তা করছি। পুলিশ সদস্যরাও বলেছেন, পুলিশ কমিশনের অধীনে থাকতে চাই। রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হতে চাই না।”