রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে প্রাথমিকের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। জলকামানের পানি ছিটিয়ে তাদের শাহবাগ মোড় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সড়কের ওপর অবস্থান নেন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। এতে সায়েন্সল্যাব হয়ে মৎস্যভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে প্রায় শতাধিক শিক্ষক দ্রুত নিয়োগের দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়েন। একই সময় পাশে অবস্থান করতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। দুপুর আড়াইটার পর পুলিশ তাদের শাহবাগ মোড থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় জলকামান থেকে তাদের ওপর পানি ছিটানো হয়। একপর্যায়ে কয়েকজনের ওপর লাঠিচার্জ করা হয়। পরে শাহবাগ মোড় থেকে পিছু হটতে বাধ্য হন তারা। বেলা পৌনে তিনটার দিকে তারা পাশেই জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন।
এর আগে সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় অনেককেই কাফনের কাপড় পরে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা যায়।
রাশেদা বেগম নামে এক নারী বলেন, “এ সরকার আমাদের চাকরি দিয়েও কেড়ে নিয়েছে। তাই আমরা রাস্তায় নেমেছি। চাকরি ফিরিয়ে না দিলে সন্তানদের নিয়েই রাস্তায় শহীদ হয়ে যাব।”
৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর আগে ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচাপতি মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। কোটা পদ্ধিত অনুসরণ করে নিয়োগ দেওয়ায় আদালত এ আদেশ দেন।
৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগপ্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এই নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।