সত্তর দশকের অন্যতম কবি মাকিদ হায়দার মারা গেছেন। বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে আটটায় উত্তরার নিজ বাসায় তার মৃত্যু হয়। তিনি নানা রোগে ভুগছিলেন।
কবির ছোট ভাই জাহিদ হায়দার বলেন, “তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসা চলছিল বাসায়। তিনি প্রতিদিন সকালে উঠতেন। আজ না ওঠায় তার ছেলের বউ দরজা নক করে সাড়া না পেয়ে ভেতরে গিয়ে দেখে, তার পালস নেই।”
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা জানিয়েছেন, আজ দুপুর ২টা থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত একাডেমির নজরুল মঞ্চে মাকিদ হায়দারের মরদেহ রাখা হবে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
পাবনায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে তার মরদেহ। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন মাকিদ হায়দার।
১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পাবনার দোহারপাড়ায় মাকিদ হায়দারের জন্ম। তার পিতা মোহাম্মদ হাকিম উদ্দিন শেখ ও মাতা রহিমা খাতুন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক মাকিদ হায়দার গণসংযোগ ও গণমাধ্যম বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার (বিসিক) মহাব্যবস্থাপক ছিলেন।
তার পরিবারের প্রত্যেকেই বাংলা ভাষায় প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিক। প্রত্যেকে স্বনামে পরিচিত। তাদের মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন বরেণ্য নাট্যকার জিয়া হায়দার ও রশিদ হায়দার। অপর ভাইদের একজন নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার। তারাও সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত।
পাঁচ দশক ধরে সাহিত্যে একটানা ভূমিকা রেখে গেছেন মাকিদ হায়দার। নিজস্ব একটা ভাষায় কবিতা লেখেছেন, সেই ভাষা ছিল আধুনিক ও পরিমিত।
তার উল্লেখযোগ্য লেখার মধ্যে রয়েছে, ‘রোদে ভিজে বাড়ি ফেরা’ ‘আপন আঁধারে একদিন’ ‘রবীন্দ্রনাথ: নদীগুলা’ ‘বাংলাদেশের প্রেমের কবিতা’ ‘যে আমাকে দুঃখ দিলো সে যেনো আজ সুখে থাকে’ ‘কফিনের লোকটা’ ‘ও প্রার্থ ও প্রতিম’ ‘প্রিয় রোকানালী’ ‘মমুর সাথে সারা দুপুর’।
মাকিদ হায়দার বাংলা একাডেমিসহ দেশের উল্লেখযোগ্য সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত।