কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজধানীর মহাখালীতে সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে সেতু ভবনে প্রবেশের পর অশ্রুসিক্ত চোখে ভবনটির বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দেখে হতবাক হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় সেখানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
১৮ জুলাই সেতু ভবনে ভাঙচুর ও আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভবন থেকে সরকারি সম্পত্তি লুট করা হয়। অনেক যানবাহন ও মোটরবাইক ভাঙচুর, বিভিন্ন শেড ও কক্ষ তছনছ করা হয় এবং আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেতু ভবনের অনেক কর্মচারীকে মারধর করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী পরে মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেন এবং ১৮ জুলাই সন্ত্রাসী হামলার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন। সরকারপ্রধান একই সঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার ধ্বংসযজ্ঞও পরিদর্শন করেন।
এর আগে, সকালে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতাল কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতায় আহতদের দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আহতদের সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
এ ছাড়া শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সহিংসতায় আহতদের দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে আহতদের খোঁজখবর নেন। তিনি চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন। আহতদের সব ধরনের চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা আহত ব্যক্তিদের যথাযথ চিকিৎসার আশ্বাস দিয়ে বলেন, দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে, যাতে কেউ আর দেশবাসীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সহিংসতার সময় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলোর অবস্থা দেখতে রাজধানীর মিরপুর ১০-এ মেট্রোরেল স্টেশন এবং শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত সপ্তাহ থেকে সারাদেশে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিটিভিসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি নামানো হয়।
এ ছাড়া গত ১৯ জুলাই ( শুক্রবার) রাত ১২টা থেকে রোববার (২১ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। যদিও প্রতিদিন এর মাঝে কয়েক ঘণ্টা করে শিথিল করা হয়। পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাওয়ায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হচ্ছে।