ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশি অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যকে অব্যাহতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই মামলায় পুলিশের চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করে ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিককেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) শুনানি শেষে এই আদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নূরে আলম।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. রফিকুল ইসলাম।
রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত ৯ অক্টোবর মামলার চার্জশিটটি আমলে নেওয়ার জন্য তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু সেদিনই বিচারক চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করে তাদের অব্যাহতির আদেশ দেন।”
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় পিনাকী ভট্টাচার্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের উপপরিদর্শক এম আব্দুল্লাহিল মারুফ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় মফিজুর রহমান ও মুশফিকুল ফজল আনসারীকেও আসামি করা হয়। তদন্তের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিটিটিসির উপপরিদর্শক মোহাম্মদ রাহাত হোসেন চার্জশিট দাখিল করেন। সেখানে পিনাকী ও আশিককে অভিযুক্ত করা হয় এবং মুশফিকুল ফজল আনসারীকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।
মামলায় বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্ট ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর নজরে আসে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের। ওই পোস্টে পুলিশ সদস্যদের সম্পর্কে বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়। ওই ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে ১৫ অক্টোবর পল্লবীর বাসা থেকে মফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশ তার দুটি ফোন জব্দ করে।
মামলার বিবরণে বলা হয়, আসামি মফিজুর রহমান তার ভুয়া ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই তালিকায় আছেন পিনাকী ভট্টাচার্য ও মুশফিকুল ফজল আনসারী। মিরপুরে পুলিশ বাহিনীর একটি অভিযানের ঘটনাকে বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়। সেই তথ্য ও ছবি পাঠানো হয় পিনাকী ভট্টাচার্যের ফেসবুক মেসেঞ্জারে।
আলামত হিসেবে নাগরিক টিভি ও আমার দেশ পত্রিকার অনলাইনের একটি করে প্রতিবেদন এবং মুশফিকুল ফজল আনসারীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে পিনাকী ভট্টাচার্যের কাছে পাঠানো কয়েকটি ছবি ও কথোপকথন তুলে ধরা হয়েছে। সেখানকার আলাপচারিতায় মুশফিকুলকে পিনাকীর কাছে বইয়ের তালিকা চাইতে দেখা গেছে।
মামলায় আরও বলা হয়, মফিজুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচার করেছেন। পরে সেই তথ্য তিনি বিদেশে অবস্থানরত পিনাকী ভট্টাচার্য, মুশফিকুল ফজল আনসারীসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে পাঠিয়েছেন। পরে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। মফিজুর রহমানসহ অন্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা হয়।