• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মনোনয়নের পর জোয়ার হারিয়েছে ‘শান্তি সমাবেশ’


সফিকুল ইসলাম
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৩, ০৭:৫০ পিএম
মনোনয়নের পর জোয়ার হারিয়েছে ‘শান্তি সমাবেশ’
আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল। ফাইল ছবি

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে তা বাতিলের দাবিতে একের পর এক কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো। ধাপে ধাপে বাড়ানো হচ্ছে অবরোধ ও হরতাল। বিপরীতে এসব কর্মসূচি প্রতিরোধে প্রথম থেকেই মাঠে ছিলো আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। শান্তি সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে তৎপর ছিল রাজনীতির মাঠে।

সংসদ নির্বাচনে দলটির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরেই পাল্টে গেছে এসব কর্মসূচির চেহারা। অবরোধ-হরতালের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশের মঞ্চগুলোতে কমে গেছে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি। ২৬ নভেম্বরের পর থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও অলি-গলিতে আগের মতো সরব উপস্থিতি নেই নেতাকর্মীদের। 

নেতৃস্থানীয়রা বলছেন, প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ায় নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী কাজে নেমে পড়েছেন নেতাকর্মীরা।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ২৯ নভেম্বর ছিলো অষ্টম দফার অবরোধ কর্মসূচির শেষদিন। এদিন অবরোধ থাকলেও মাঠে তেমন একটা দেখা যায়নি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের।

দলের মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের অনেকে মাঠ ছেড়েছেন। তবে দু’একটি থানা এলাকায় মনোনয়ন বঞ্চিত ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, রাজধানীর ২০টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিল ঢাকা-১৪ আসনে। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলো ২৬ জন।মনোনয়ন যুদ্ধের আগে মাঠ কাঁপিয়েছেন এরাই। হরতাল-অবরোধ যাই হোক, প্রতিদিন কর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন নেতারা। শান্তি সমাবেশসহ স্লোগান, মিছিল, শোডাউনে উত্তাল ছিলো পুরো সংসদীয় এলাকা। কিন্তু মনোনয়ন ঘোষণার পর শান্তি সমাবেশের মঞ্চ আগের মতোই আছে, তবে সেখানে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি কমে গেছে চোখে পড়ার মতো।

গাবতলী মাজার রোডের মুখে মঞ্চ করেছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সাবিনা আক্তার তুহিন। সেখানে নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিদিনই ব্যস্ত সময় পার করতেন তিনি। বুধবার দেখা মেলেনি এই নেত্রীর। এমনকি তার মঞ্চেও কর্মীদের দেখা যায়নি। একই চিত্র গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকার মুখে অবস্থান নেওয়া লুৎফর রহমানের মঞ্চেও।

কথা হয় গাবতলী এলাকার একজন আওয়ামী লীগ কর্মীর সঙ্গে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার পর এখন আর সিনিয়র নেতাদের তেমন দেখা যায় না। এতদিন অনেকে মনোনয়নের আশায় নিয়মিত শান্তি সমাবেশে অংশগ্রহণ করতেন। মনোনয়ন না পেয়ে চুপসে গেছে তারা।

এই নেতা আরও জানান, অনেকেই এখন দলের মনোনীত প্রার্থী মাইনুল হোসেন খান নিখিলের দরজায় ভিড়েছেন। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাবেক ইউনিট সভাপতি আসাদুজ্জামান এরশাদ বলেন, “নেতাকর্মী একেবারে নাই আসলে তা বলা যাবে না। কিছুটা কমে গেছে। তারা নির্বাচনী কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্ব স্ব এলাকায়।

একই চিত্র ঢাকা-১৩ আসনে। আসনটি থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া জাহাঙ্গীর কবির নানকের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে শান্তি সমাবেশ। কিন্তু কয়েক জায়গায় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা গেছে নামমাত্র। একই চিত্র ঢাকা-১০ ও ঢাকা-৯, ঢাকা-৮, ঢাকা-৭ এবং ঢাকা-৬, ঢাকা-৪ আসনের অন্তর্গত ধানমন্ডি-জিগাতলা, লালবাগ, মতিঝিল-পল্টন, বিজয়নগর, ওয়ারী-সুত্রাপুর, শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ি, শনিবার আখড়া এলাকার।

মনোনয়ন বঞ্চিত এ কে এম রহমতুল্লাহর ঢাকা-১১ আসনে নেতাকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচিও এখন শিথিল। তবে ঢাকা-৫ নির্বাচনী এলাকার প্রবেশপথ ডেমরার স্টাফ কোয়াটারে ৭০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা রমজান, ৬৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুর রহমান এবং সাইনবোর্ডে ৬৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী হানিফ তালুকদার, নাছির মেম্বার ও ৬৬ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো. রাসেল ভূইঁয়ার নেতত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির অবরোধের প্রতিবাদে সর্তক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।

Link copied!