বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। চেক-ইন করা লাগেজ খুঁজে পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। বন্দরে কর্মরতদের আচরণেও বিরক্ত হতে হতো যাত্রীদের। বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশি বা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হতো। দীর্ঘদিন ধরে তাদের অভিযোগের পাহাড় জমছিল।
তবে সরকার পরিবর্তনের পর চিরচেনা সেই চিত্র পাল্টে গেছে। যাত্রীসেবার মান বেড়েছে আগের চেয়ে অনেকটা। এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ডেইলি স্টার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই সপ্তাহে ঢাকা বিমানবন্দরের ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা করতে দেখা গেছে অনেককে। ফেসবুকের একাধিক গ্রুপে প্রশংসা করে পোস্ট দিতেও দেখা গেছে। তারা বলছেন, যাত্রীসেবার মান অনেক বেড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বাইরে থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা যাত্রীরা বিষয়টির পরিবর্তন দেখতে পেয়েছেন। ফ্লাইট থেকে নামার পর দ্রুতই পেয়ে যাচ্ছেন লাগেজ। সম্প্রতি কাতার এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে নিউইয়র্ক থেকে আসা যাত্রী মো. কামাল হোসেন তার অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন।
বিমানবন্দরে নাটকীয় পরিবর্তন দেখতে পেয়েছেন কামাল হোসেন। তিনি বলছেন, ‘আগে আমাদের লাগেজ পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো এবং ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতেও অনেক সময় লেগে যেত। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি বদলেছে। আমি বেল্টের কাছে এসেই আমার লাগেজটি পেয়ে যাই।’
একই ধরনের অভিজ্ঞতা সম্প্রতি সিঙ্গাপুর থেকে আসা আবুল কাশেমেরও। তিনি বিমানবন্দরে এসে অবাক হয়েছেন। কারণ তিনি ফ্লাইট অবতরণের ২০ মিনিটের মধ্যেই তার লাগেজ পেয়ে যান। অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘ইমিগ্রেশন বিভাগ ও বিমানবন্দরের অন্যান্য কর্মকর্তাদের ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে।’
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ যাত্রী তাদের লাগেজ পেয়ে যাচ্ছেন। বাকিদের ক্ষেত্রেও সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে গত ১৮ আগস্ট নিয়োগ পেয়েছেন এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। যার নেতৃত্বে সর্বক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিতের চেষ্টা করা হচ্ছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে সমন্বয় করা হচ্ছে।
এদিকে, বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিমান। বিমানবন্দরের সব কর্মী এখন দিনভর ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সেবার মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, ‘যাত্রীরা যাতে স্বচ্ছন্দে তাদের লাগেজ পান, সে বিষয়টি নিশ্চিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। তিনি জানান, বোর্ডিং ব্রিজে উড়োজাহাজ অবতরণ ও ইঞ্জিন বন্ধের ১৮ মিনিটের মধ্যে প্রথম লাগেজ এবং ৬০ মিনিটের মধ্যে সর্বশেষ লাগেজটিও বেল্টে চলে আসে।