• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রিমান্ডে কান্নাকাটি করছেন পলক, দিলেন যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৪, ০৩:১৫ পিএম
রিমান্ডে কান্নাকাটি করছেন পলক, দিলেন যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলা হতাহতের ঘটনায় জনরোষের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দলের মন্ত্রী-এমপিসহ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা আত্মগোপনে যেতে শুরু করেন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন। তাদের মধ্যে একজন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন (৬ আগস্ট) ভারতের রাজধানী দিল্লি যাওয়ার উদ্দেশে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলে বিমান বাহিনীর সদস্যরা জুনাইদ আহমেদ পলককে আটক করেন। পরে বিকেলে তাকে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে বের হওয়ার পর আত্মগোপনে যান পলক। এরপর বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে রাজধানীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

জানা যায়, ২০০৮ সালে নাটোরের সিংড়া উপজেলা থেকে জুনাইদ আহমেদ পলক প্রথমবার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে করেন নির্বাচন। নির্বাচনী হলফনামায় লেখেন ১৫ শতক কৃষি জমি, ব্যাংকে ৫০ হাজার টাকা এবং ৬০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে তার।

এরপর তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী হয়ে আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান পলক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা। তাই জয়ের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ পান পলক। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হয়ে ওঠেন স্বেচ্ছাচারি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) একটি সূত্র জানিয়েছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পাঁচজন ভিআইপি আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাজধানীর নিউমার্কেট ও পল্টন থানার পৃথক দুটি হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর মধ্যে পলককে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মামলাগুলো এখনো থানা পুলিশের কাছেই তদন্তাধীন। তবে ভিআইপি আসামি হিসেবে তাদের মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। সেখানেই তদন্ত কর্মকর্তাসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর থেকেই বেশিরভাগ সময় কান্নাকাটি করছেন জুনাইদ আহমেদ পলক। ইন্টারনেট শাটডাউনের বিষয়েও তিনি তার দায় অস্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য, প্রতিমন্ত্রী হলেও ইন্টারনেট বন্ধ করার ক্ষেত্রে তার একক কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না।

জিজ্ঞাসাবাদে পলক জানিয়েছেন, গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ও এনটিএমসির মহাপরিচালক সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের নির্দেশনা মেনে তিনি ইন্টারনেট শাটডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এছাড়া ইন্টারনেট শাটডাউনের ক্ষেত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সায় ছিল।

জিজ্ঞাসাবাদকারী সূত্রের দাবি, ভিআইপি আসামিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছেন জুনাইদ আহমেদ পলক। এত দ্রুত সরকারের পতন হতে পারে, তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। যদিও একদিন আগে স্ত্রী-সন্তানদের বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও তিনি স্বীকার করেছেন। পলকের ভাষ্য, চাইলে তিনিও দেশ ছেড়ে পালাতে পারতেন। তবে শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘বেঈমানি করা হবে’ বলে তিনি যাননি। 

সূত্র : যুগান্তর

Link copied!