মো. রাকিব সরকার। রাজধানীর উত্তরা থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় এসেছেন ব্লেজার কিনতে। ১৫০০ টাকা দিয়ে রায়হান ফ্যাশন স্টল থেকে একটি কালো ব্লেজার কিনেছেন তিনি। গত কয়েকদিন আগেও যে ব্লেজার বিক্রি হয়েছে ১৮০০-২২০০ টাকা।
সংবাদ প্রকাশকে মো. রাকিব সরকার বলেন, “মেলার শুরুতে নাকি সব জিনিসের দাম বেশি থাকে তাই ইচ্ছা করেই আসিনি। শুনেছি শেষ সময়ে সব পণ্যে ধামাকা অফার দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই আর দেরি না করে মেলায় চলে এলাম।”
রাকিব সরকার আরও বলেন, “আমি ১৫০০ টাকা দিয়ে একটি কালো রঙের ব্লেজার কিনেছি। যা কিছুদিন আগেও নাকি ১৮০০-২২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ সে একই ব্লেজার আজ ১৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো ব্যবসায়ীরা কি লাভ করেননি? অবশ্যই তো লাভ করেছে। তাহলে শুরুতে সীমিত লাভে ব্লেজার বিক্রি করলে কি ক্রেতাদের চাহিদা বাড়ত না? অবশ্যই বাড়ত। ব্যবসায়ীরা সবসময় বেশি লাভ করে অভ্যস্ত। কম লাভে তাদের পোষায় না, এটাই স্বাভাবিক।”
শুধু রাকিব একাই আসেননি ব্লেজার কিনতে। তার মতো আরও শতাধিকের বেশি দর্শনার্থী এসেছেন শেষ সময়ে ধামাকা অফারে কিছু কেনাকাটা করতে। তাদেরই একজন রাজু চৌধুরী। বাণিজ্যমেলায় কেনাকাটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কথায় আছে ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’ তাই শেষ ভালোটাই করতে এলাম। কারণ, মেলায় যে ধামাকা অফার চলছে তাতে ব্লেজার না কিনে পারলাম না। যদিও গরম বেড়েছে, তবুও পরবর্তী শীতে তো পড়তে পারব। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে। তবে গতবারের চেয়ে এবার সব পণ্যের দাম অত্যধিক বৃদ্ধি। যা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার অনেক বাইরে। মেলায় দামের দিকে সরকারের নজর দেওয়া দরকার।”
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি শুরু হওয়া ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা নামবে ২০ ফেব্রুয়ারি। সে হিসেবে আর মাত্র বাকি ২ দিন। এই শেষ সময়ে পণ্য বিক্রি বৃদ্ধির আশায় ১০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত ব্লেজারে ডিসকাউন্ট দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের উদ্দেশ্য বিক্রির লক্ষ্য পূরণ।
ব্যবসায়ীরা জানান, দেরি করে মেলা শুরু হওয়ায় শীত বিদায় নিয়ে গরমের আবহাওয়ায় মেলা শেষ হচ্ছে। যা ব্যবসা ক্ষেত্রে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মেলায় দর্শনার্থী বাড়লেও সেই তুলনায় বিক্রি বাড়েনি। তবে শেষ সময়ে যা বিক্রি বেড়েছে তাতে লক্ষ্য পূরণ হবে না।
শোভন নামের এক ব্লেজার বিক্রেতা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমাদের শুরুতে ব্লেজার বিক্রি মন্দা গেছে। সারাদিন কয়েকটা ব্লেজার বিক্রি হয়েছে এমনও দিন গেছে। মেলার মাঝ সময়ে এসে আলহামদুলিল্লাহ বিক্রি বাড়ে। শেষ সময়ে এসে অফার দেওয়ার কারণে বিক্রি বেড়েছে।”
ওই ব্লেজার বিক্রেতা বলেন, “আগারগাঁও যেভাবে ব্যবসা হয়েছে এখানে তেমন হচ্ছে না। যাতায়াত ব্যবস্থায় সুবিধা হলেও অনেক দূর হয়ে যায়। অনেকেই হচ্ছা থাকলেও ব্যস্ততার কারণে আসতে পারেন না।”
এক প্রশ্নের জবাবে শোভন বলেন, “ব্যবসায় আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, তা পূরণ হতে এখনো অনেক বাকি আছে। মেলার ঘর ভাড়া, ভ্যাট আছে, দোকানের কর্মচারীদের বেতন আছে, সবকিছু দিয়ে কী থাকে বলেন।”