• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে রাজনীতিতে ছিল বৈদেশিক চাপ, উত্তাল ছিল রাজপথ


নূর মামুন
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩, ০৫:৩৪ পিএম
বছরজুড়ে রাজনীতিতে ছিল বৈদেশিক চাপ, উত্তাল ছিল রাজপথ
গ্রাফিক্স : সংবাদ প্রকাশ

দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে ২০২৩ ছিল খুব আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষ ও দলীয় সমর্থকদের মাঝে নানা ইস্যুতে ছিল টান টান উত্তেজনা। কখনো এমন হয়েছে যে, এই বুঝি টানা তিন মেয়াদের সরকার ক্ষমতা হারাচ্ছে। হুট করে আবার থেমে গেছে সেই উত্তেজনার পারদ। দুই দলের মহাসমাবেশ ঘিরে রক্তপাতের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শঙ্কাও জেগেছিল ব্যাপকভাবে।

এ ছাড়া দেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশি মোড়লরাও এ বছর কম টানাহেঁচড়া করেনি। বিদেশি পছন্দের ক্ষমতায়ন নিয়ে দেশের রাজনীতিতে ব্যস্ত ছিল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, রাশিয়া ও চীনের মতো পরাক্রমশালী কয়েকটি দেশ। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় কম যাননি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস।

কূটনৈতিক কৌশলের পাল্টাপাল্টি নানা চ্যালেঞ্জ রাজনীতির মাঠকে তপ্ত করেছিল মুহূর্তে মুহূর্তে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচনায় ছিল বাইডেন, পুতিন, শি জিনপিংসহ নরেন্দ্র মোদিদের বিভিন্ন অবস্থান আর কৌশল। সবকিছু ছাপিয়ে ৭২ এর সংবিধান বহাল রেখে ক্ষমতায় অবিচল রয়েছে আওয়ামী লীগ। চালিয়ে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কাজ। অনেকেই বলছেন, টানা চতুর্থবারও ক্ষমতার পথে হাঁটছে দলটি।

অপরদিকে, সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো ও নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে পুরো বছরজুড়ে সমমনাদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। সবশেষ সরকারকে কোনো সহযোগিতা না করতে প্রশাসন ও দেশবাসীকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি।

আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, আহত ১৫

প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হন। এ সময় সাতটি মোটরসাইকেলে আগুনসহ বেশ কয়েকটি দোকানে লুটপাটের ঘটনা ঘটে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিক সদর উপজেলার কালিয়াহরিপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে মাঠে আ.লীগ-বিএনপি

বছরের শুরু থেকে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা করে বিএনপি। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ন্যায় সারা দেশে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগও। এভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত রাজনীতির মাঠ দখলে রাখতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি এখনো চলছে।

দুই দলের কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ভিড়। ছবি : সংগৃহীত

এসব কর্মসূচিতে রাজধানী ও মহানগরকেন্দ্রিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হলেও কিছু কিছু জেলায় সংঘর্ষ এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এতে ইউনিয়ন পর্যায়ে দুটি দলের কর্মসূচিতে নেতাদের মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি হয়। তবে আওয়ামী লীগ সংঘাত চায় না, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাসী উল্লেখ করেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।

তারা বলেন, “আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে একটা অঘটন সৃষ্টির আশায় বিএনপি গায়ে পড়ে এসব করছে।”

খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি

খাগড়াছড়ি সদরে একই স্থানে বিএনপির অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দল ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়ায় গত ৮ এপ্রিল ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি

খাগড়াছড়ির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা পুলিশের প্রতিবেদনে ৮ এপ্রিল পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায় জাতীয় শ্রমিক লীগ পৌর শাখার শ্রমিক সমাবেশ ও ইফতার বিতরণ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগীয় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। একই স্থানে দুই সংগঠনের কর্মসূচিতে যেন শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয় সে লক্ষ্যে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পৌর বাস টার্মিনাল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ জারি করা হলো।

‘এক দফায়’ অনড় আ.লীগ-বিএনপি

যুদ্ধের ডামাডোল বাজিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে পৃথক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামে দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল। তবে কর্মসূচি পালনে একই সুরে কথা বলেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। একই সঙ্গে দল দুটি নিজ নিজ দাবিতে অনড় অবস্থানের কথা জানান।

সরকার পতনের এক দফা দাবির পর পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগও। দলটির এক দফায় বলা হয়, শেখ হাসিনাকে ছাড়া নির্বাচন নয়। নির্বাচন হবে সংবিধান সম্মতভাবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংবাদ প্রকাশ

এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপির খবর জানেন? তাদের এক দফা জানেন? তাদের এক দফা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আমাদেরও দফা একটা। শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচন শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই হবে। শেখ হাসিনাই নেতৃত্ব দেবেন।”

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমাদের এক দফা দাবি, এই জালিম সরকারের অধীনে দেশে কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।”

পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আ.লীগ-বিএনপির

সংবিধান মেনে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনের সিদ্ধান্তে বছরের শুরু থেকেই অনড় আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে রাজপথের লড়াইকে বেছে নেয় বিএনপি। রাজধানীসহ সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দেয় এই দুই দল। এতে কেউ কাউকে ছাড় দেয়নি। উসকানির কথা জানিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন দল দুটির শীর্ষ নেতারা।

গত ২৪ জুলাই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, ২৭ জুলাই সরকারের পদত্যাগের দাবিতে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। একই দিনে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনও কর্মসূচি দিয়েছে। এ নিয়ে সংঘাতের আশঙ্কা আছে কি না?

প্রতীকী ছবি

জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সংঘাতের উসকানি আমরা দেব না। আমাদের পক্ষ থেকে সংঘাত হওয়ার শঙ্কা নেই। আমরা ক্ষমতায় আছি। আমরা কেন উসকানি দেব? আমরা বরাবরই বলে আসছি, আমাদের শান্ত থাকতে হবে। সংঘাত হলে আমাদের ক্ষতি। তবে কেউ জনগণের জানমালের ক্ষতি করলে নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব।”

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “তারা (বিএনপির নেতাকর্মীরা) লাঠিসোঁটা নিয়ে আসছে। পাশাপাশি এখন মশার কয়েল নিয়ে আসতে হবে। আমরা তাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। বিরোধীদের সরকার পতনের দিবাস্বপ্ন ভেসে যাবে।”

একই দিন, দুপুরে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে বিএনপির মহাসমাবেশের দিন যুবলীগের সমাবেশ ডাকাকে সরকারের সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “সরকারি দল পরিষ্কারভাবে সংঘাত সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। সরকারের বিশেষ ব্যক্তিরা উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। কোনো ধরনের সংঘাত হলে, এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।”

সরকারি দলকে সমাবেশের তারিখ পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “বরাবরের মতো সরকার আবার রাস্তাঘাট-যানবাহনে বাধাবিঘ্ন সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে সরকারের মন্ত্রীরা হুমকি দিচ্ছেন, তাদের ভাষা সন্ত্রাসীদের মতো। স্পষ্টত তারা সংঘাত সৃষ্টির হুমকি দিচ্ছেন। কিন্তু দেশের জনগণ এখন রুখে দাঁড়িয়েছেন।”

নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ : কাদের

নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত ২৫ জুলাই সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি : সংগৃহীত

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন শোকের মাসের কর্মসূচি দিতে যায়, বিএনপি এবং কিছু মিডিয়া এটাকে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বলে। আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বা সংঘাত চায় না।”

দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ সতর্ক থাকবে; কেউ সংঘাত করতে এলে প্রতিহত করা হবে। বিএনপি খালি মাঠ পেলে সংঘাত করতে চাইবে। বিএনপি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী নয়, অস্ত্রশক্তিতে বিশ্বাসী। এরশাদ কিংবা জিয়া কেউই জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি।”

আলোচিত ‘২৮ অক্টোবর’

সরকার পতনের আন্দোলনে বছরের শুরু থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। ওই সব আন্দোলনে বড় ধরনের কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু গত ‘২৮ অক্টোবর’ তা বড় সহিংসতায় রূপ নেয়। যদিও দিনটিকে ঘিরে আগে থেকেই সংঘাতের আশঙ্কা করেছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, ওই সমাবেশ ঘিরে উদ্বেগের কারণ ছিল ১৭ বছর আগের স্মৃতি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘিরে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের সমাবেশ ছিল পাশাপাশি এলাকায়। কিন্তু হঠাৎ দলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনভর সংঘাত, সহিংসতায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। একপর্যায়ে জারি হয় জরুরি অবস্থা। সেই একই ইস্যু নিয়ে চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর এই তিন দলের সমাবেশ ঘিরে সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা জাগে আগে থেকেই।

সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত

এদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে এক পুলিশ সদস্য নিহতের পাশাপাশি একজন রাজনৈতিক কর্মীও মারা যায়। এ ছাড়া ৪১ জন পুলিশ সদস্য ও ২৮ জন সাংবাদিকসহ আরও অনেকে আহত হন।

পুলিশের হিসাবে, ৫৫টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে ওই দিন। বেশ কয়েকটি পুলিশ বক্স পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় কঠোর হয়ে ওঠে সরকার।

অসহযোগের ডাক বিএনপির

গত ২০ ডিসেম্বর অসহযোগের ডাক দিয়ে সরকারকে আর কোনো সহযোগিতা না করতে প্রশাসন ও দেশবাসীকে আহ্বান জানায় বিএনপি। একই সঙ্গে আগামী ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে দলটির পক্ষ থেকে আদালতে হাজিরা না দিতেও আহ্বান জানান দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি : সংগৃহীত

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আজ (২০ ডিসেম্বর) থেকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু। এরই অংশ হিসেবে আগামী ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন বর্জন করুন। ভোট গ্রহণে নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করবেন না।”

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, “বর্তমান অবৈধ সরকারকে সকল প্রকার ট্যাক্স, খাজনা, ইউটিলিটি বিল এবং অন্যান্য প্রদেয় দেওয়া স্থগিত রাখুন। ব্যাংকে টাকা জমা রাখা নিরাপদ কি না, সেটিও ভাবুন। মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় অভিযুক্ত লাখ লাখ রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা আজ থেকে আদালতে মামলার হাজিরা দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।”

রাজধানীতে জামায়াতের সমাবেশ

আরামবাগ মোড়ে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ। ছবি : সংগৃহীত

পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে রাজধানীর আরামবাগ মোড়ে গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশ করে নিবন্ধন হারানো দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এদিন শুরুতে কিছুটা সংঘাত হলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল না। ওই সমাবেশ থেকে জামায়াত নেতারা বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়া এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিসহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি।

জামায়াতের সমাবেশের বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, জামায়াতের সঙ্গে পরবর্তী সময়ে আলোচনা হয়েছে, সমাবেশে বক্তব্য রেখে তারা চলে যাবে। তারা কোনো বিশৃঙ্খলা করেনি।

পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, জামায়াতকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। নিবন্ধিত না হলেও সেদিন তাদের বাধা দিলে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হতো। তাই সহিংসতা এড়াতে সমাবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়নি।

Link copied!