• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

চিরকুটে লেখা ‘আমাদের দুজনের মরদেহ ঢাকায় সরকারি কবরস্থানে দাফন দিয়েন’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২৫, ০৩:৪৯ পিএম
চিরকুটে লেখা ‘আমাদের দুজনের মরদেহ ঢাকায় সরকারি কবরস্থানে দাফন দিয়েন’
লোগো

রাজধানীর ওয়ারীতে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে ওয়ারী থানার ওয়ার স্ট্রিটের জমজম টাওয়ারের পাঁচতলার একটি বাসা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। ওই দম্পতি হলেন মোহাম্মদ মুঈদ (৩২) ও আইরিন আক্তার রত্না (৩৫)। ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

ওয়ারী থানার এসআই কাউছার আহম্মদ বলেন, শনিবার রাতে খবর পেয়ে ওই বাসা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। স্বামী মুঈদের মরদেহ পচনশীল ছিল। একই বিছানায় তার স্ত্রী রত্নাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সিআইডি আলামত সংগ্রহের পর মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

এসআই আরও বলেন, ওই বাসায় স্বামী স্ত্রী দুজনই থাকত। কারও সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না। ছুটা গৃহকর্মী কাজ করে যেত। দুই মাস ধরে বেতন দিতে পারেননি। রোজার ঈদের পরে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বেতন নিতে এসে অনেকক্ষণ কলিং বেল টিপেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চলে যায় গৃহকর্মী। এরপর শনিবার বিকেলে বাড়িওয়ালার মাধ্যমে ওই বাসায় আবার যান গৃহকর্মী। অনেক চেষ্টার পর সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন তারা। খবর পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে পুলিশ। ভেতরের দরজাগুলো খোলা অবস্থায় ছিল।

এসআই কাউছার বলেন, মরদেহ দুটির পাশে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা, ‘বিয়ের পর আমার বাবা-মা, স্বামীর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নাই। আমাদের দুজনের মরদেহ ঢাকায় কোনো সরকারি কবরস্থানে দাফন দিয়েন। আমার এবং আমার স্বামীর বাড়িতে নেওয়ার দরকার নাই।’

এসআই জানান, স্বামী মুঈদ দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। স্ত্রী রত্না বাইরে কোথাও বের হতেন না। ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী চার-পাঁচ দিন আগে মারা গেছেন। এই শোকে স্ত্রী কোনো কিছু সেবন করে আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

মৃত মুঈদের বড় ভাই ডা. মুগলী সানি বলেন, ‘২০০৯ সালে বিয়ে হয় তাঁদের। তাঁদের কোনো সন্তান ছিল না। তবে গত ২০২১ সালের পর তাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ নাই। ঢাকার কোথায় থাকত আমাদের জানা ছিল না। তার ভাইয়ের আমেরিকায় যাওয়ার কথা ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশের মাধ্যমে তাদের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানতে পারি। তবে কীভাবে মারা গেছে তা আমাদের জানা নেই।

সানি আরও জানান, তাঁদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার আড়াইকান্দি গ্রামে। বাবার নাম মো. মুসা। মৃত রত্নার বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায়। বাবার নাম জয়নাল আবেদিন।

Link copied!