• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে তেল নিয়ে তেলেসমাতি


খাদিজা নিপা
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২২, ০৪:২৬ পিএম
বছরজুড়ে তেল নিয়ে তেলেসমাতি

চলতি বছর ভোজ্য তেল নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয়েছে ক্রেতাদের। তেলের দাম বৃদ্ধি, বাজার থেকে উধাও হয়ে যাওয়া—সব মিলিয়ে ভোজ্যতেল নিয়ে অস্বস্তি ছিল সারাবছরই।

তেলের দামের উল্লম্ফনটা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। ২০২০ সালের আগস্ট মাসে লিটার প্রতি বোতলজাত ভোজ্যতেলের দাম ছিল সর্বোচ্চ ১১৩ টাকা যা ২০২২ সালে এসে দাঁড়ায় ১৯২ টাকা। যদিও এ বছরের ভোজ্য তেলের সর্বোচ্চ দাম ওঠে ২০৫ টাকা।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পায়। এর ফলে দফায় দফায় ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ সরকার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৬০ টাকা লিটার, খোলা তেল লিটার প্রতি ১৫৫ টাকা ও পাম তেল ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা বছর শেষে ডিসেম্বর মাসে এসে দাঁড়ায় ১৮৭ টাকায়।

বছরের শুরু এবং শেষের ব্যবধান ২৭ টাকা হলেও তেলের মূল্যবৃদ্ধির হার ধারাবাহিক ছিল না। তার প্রমাণ পাওয়া যায় চলতি বছরের তেলের বাজারের দরদাম দেখলেই। বছরের শুরুতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ১৬০ টাকা হলেও এক লাফে ৩৮ টাকা বেড়ে ১৬০ থেকে ১৯৮ টাকা হয় মে মাসে। সয়াবিন তেলের বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দেশের বাজারে মূল্য সমন্বয় করার জন্য এ দাম বৃদ্ধি বলে তখন জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।

এই বৃদ্ধির ফলে বাজারে দেখা গিয়েছিল তেলের সংকট। প্রভাব পড়েছিল সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে। বাজারে সয়াবিন তেল গায়েব হয়ে গেলেও অন্যদিকে বন্দরে হাজার হাজার টন তেল পৌঁছানোর খবর এসেছিল। আবার একই দিকে সরকারি বিভিন্ন অভিযানে লাখ লাখ টন তেল বিভিন্ন দোকান ও গুদাম থেকে জব্দ করা হয়েছিল। তখন সেবা সীমিতকরণ বা নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে দেশের ভোজ্যতেল আমদানিকারক আট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।

জুন মাসে আরেক দাম দফায় দাম বৃদ্ধি শেষে বোতলজাত সয়াবিন তেল দাঁড়িয়েছিল ২০০-২০৫ টাকা লিটার। অবশ্য ২৬ জুনের পর দাম কিছুটা কমে লিটারপ্রতি হয়েছিল ১৯৯ টাকা ও খোলা তেল ১৮০ টাকা। জুলাই মাসে বোতলজাত সয়াবিন তেল  লিটারপ্রতি ১৪ টাকা কমে হয়েছিল ১৮৫ টাকা।

কিন্তু দাম কমার ধারাবাহিকতায় ছেদ পরে এখানেই। ঠিক এক মাসের ব্যবধানে ২৩ আগস্ট সয়াবিন তেলের দাম আবারও লিটারপ্রতি ৮ টাকা বেড়ে ১৯২ টাকা হয়। দেড় মাস তেলের বাজার স্থির থাকার পর ৫ অক্টোবর বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৩ টাকা কমে ১৭৮ টাকা, খোলা তেলের দাম লিটার প্রতি ১৭ টাকা কমিয়ে ১৫৮ টাকা করা হয়। একমাসের ব্যবধানে ১৭ নভেম্বর বোতলজাত তেলের দাম ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৯০ টাকা হয়। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে সয়াবিনের মৌসুম ও শীতকাল বলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও এর প্রভাব নেই দেশের বাজারে। তবে ১৫ ডিসেম্বরের পর থেকে দেশের বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩ টাকা কমে ১৮৭ টাকা, পাম তেল ১১৭ টাকায় এসে দাঁড়ায়।  
 

Link copied!