গত ১৫ বছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পুকুর-সাগর নয়, দুর্নীতির ‘মহাসাগর’ চুরি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাট এবং নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, “আমি যে দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি সেখানে ‘সাগর চুরি’ নয়, ‘মহাসাগর চুরি’ হয়েছে। শেষ ১৫ বছর যে সরকার দায়িত্বে ছিল, তারা পুরো সিস্টেমকে দুর্নীতিতে পরিণত করেছে। দুটি মন্ত্রণালয়ের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে দুর্নীতি নেই।”
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বরিশালের বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “পাট মন্ত্রণালয়কে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি চেষ্টা করছি, মন্ত্রণালয়টিকে দাঁড় করাতে। ১৫ বছরের দুর্নীতি এক-দুই বছরে সমাধান সম্ভব নয়। এখান থেকে বের হতে সময়ের প্রয়োজন।”
পাট উপদেষ্টা বলেন, “আঞ্চলিক মার্কেটগুলোতে পাট ব্যবহার বৃদ্ধিতে কাজ করছি। যাতে পাট উৎপাদনে চাষিরা উৎসাহিত হন। সরকারি পাটকল একটিও চলছে না। এগুলো দিয়ে সরকারের পক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব নয়।”
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বিগত সরকারের আমলে একজনের হাজার কোটি টাকা, একজনের ৩৬০টি বাড়ি। দু-দিন আগে কী ছিল? এখন তারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে দুর্নীতি দূর করা।”
পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সহিংসতা প্রসঙ্গে পাট উপদেষ্টা বলেন, “পাহাড়ে অনেকে ইন্ধন দিচ্ছে। সেই ইন্ধন আঞ্চলিকভাবে প্রতিহত করতে হবে। সেখানে মিলেমিশে থাকাটা প্রয়োজন। এটি শুধু সরকারের নয়, সমাজেরও দায়িত্ব। পাহাড়ে অনেক রক্তপাত হয়েছে, এ রক্তপাত বন্ধ করা প্রয়োজন। আর ১৪ কমিউনিটির মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখতে না পারলে সবারই ক্ষতি হবে।”
পাহাড়ি অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “পাহাড়ে বাঙালি-অবাঙালিসহ ১৪টি কমিউনিটি বাস করছে। তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় রাখতে পাহাড়িদের দুঃখ-বেদনা কষ্টটা বুঝতে হবে। আঞ্চলিকভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ গড়ে না উঠলে এ সমস্যা থেকেই যাবে।”
একাডেমি পরিদর্শন শেষে এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, দেশের মেরিন একাডেমি আধুনিকায়ন এবং এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক নৌ সেক্টরে আরও বেশি সংযুক্ত করার ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে।
এ সময় শেখ হাসিনা সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মো. মঞ্জুর মোর্শেদ আলম, বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনসহ স্থানীয় সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।