ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে বঙ্গভবনের দরবার হলে প্রথমে প্রধান উপদেষ্টা ও পরে অন্য উপদেষ্টারা (দুইজন ছাড়া) শপথগ্রহণ করেন। শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
শপথ নেওয়া বাকি উপদেষ্টারা হলেন, সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ড. আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মো. নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সুপ্রদীপ চাকমা, ফরিদা আখতার, বিধান রঞ্জন রায়, আ ফ ম খালিদ হাসান, নুরজাহান বেগম, শারমিন মুরশিদ ও ফারুকী আযম।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে বঙ্গভবন এবং এর আশপাশে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। বঙ্গভবনের ভেতরে এবং বাইরের সড়কেও রাখা হয় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা। রাজধানীর রাজউক, অলিম্পিক ভবন, মওলানা ভাসানী স্টেডিয়াম ও বঙ্গভবনের আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ১০ মিনিটে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরেন ড. ইউনূস। এর কিছুক্ষণ পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, “আজকে আমাদের গৌরবের দিন। যে বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন বিজয় দিবস সৃষ্টি করল তরুণরা, সেটাকে সামনে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যারা এটা সম্ভব করেছে, তাদের প্রতি আমি আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তারা বাংলাদেশকে রক্ষা করেছে। নতুন করে পুনর্জন্ম দিয়েছে।”
এসময় ছাত্রজনতার এই অভ্যুত্থানকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ হিসেবে উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, “আমার আবু সাঈদের কথা মনে পড়ছে। অবিশ্বাসী একটা সাহসী যুবক।”
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “দেশবাসীর কাছে অনুরোধ, আমার ওপর বিশ্বাস রাখেন, ভরসা রাখেন, দেশে কারও ওপর কোনো হামলা হবে না।”
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, “এ স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে। প্রতিটি মানুষের কাছে এর সুফল পৌঁছে দিতে হবে। স্বাধীনতার অর্থ হলো, দেশ তোমাদের হাতে। তোমাদের মনের মতো করে গড়তে পারো। পালটে ফেলতে পারো। পুরোনোদের বাদ দাও। তোমাদের মধ্যে সৃজনশীলতা আছে, তাকে কাজে লাগাও।”
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় তাকে স্বাগত জানান গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদসহ অন্য সমন্বয়কেরা। ড. ইউনূস বিমানবন্দরে পৌঁছার আগেই তাকে স্বাগত জানানোর জন্য সেখানে অবস্থান করছিলেন তারা।
এছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংক, বাংলাদেশ বিমান শ্রমিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ব্যানার নিয়ে বিমানবন্দরে হাজির হন। তারাও তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বুধবার (৭ আগস্ট) ড. ইউনূস ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের চার্লস দ্য গল বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন।